পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার ৫৮ নং মুক্তারকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে স্কুলটির ক্লাসরুম, ছাদ ও খেলার মাঠ দখল করে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এতে স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় সংলগ্ন বাসবাসকারী সাবেক সভাপতি মো. মজিবুর রহমান খান স্কুলটির নতুন ভবন নির্মাণের পর থেকে পুরাতন ভবনের একটি শ্রেণিকক্ষ, ছাদ ও খেলার মাঠ দখল করে পারিবারিক কাজে ব্যবহার করে আসছেন। এছাড়াও তিনি স্কুলের সঙ্গেই গোয়াল ঘরে তৈরি করে পালন করছেন গরু। এতে স্কুলের পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় দিন দিন বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীও কমে যাচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোসা. নিলুফা জাহান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সাবেক সভাপতি মো. মজিবুর রহমান খানের বাড়ি স্কুল সংলগ্ন হওয়ায় তিনি স্কুলের পুরাতন ভবনের একটি কক্ষ, টয়লেট ও ভবনের ছাদ দখল করে ধান শুকনো ও তার পারিবারিক কাজে ব্যবহার করছেন। এছাড়াও ভবনের সঙ্গেই গোয়াল ঘর তৈরি করে পালন করছেন গরু। এতে বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানদেরকে এখন থেকে নিয়ে অন্য স্কুলে ভর্তি করাচ্ছেন। কিছু দিন আগে তিনি স্কুলের নতুন ভবনের পিছনের খালে এলাকাবাসীর সঙ্গে মিলে বাধ দেন। এতে পানির স্রোতে স্কুলের পাশের বাধের অংশ ও ভবনের পাইলিং ভেঙ্গে গিয়ে ভবনটি এখন হুমকির মুখে পড়েছে। গত মাসের প্রথম দিকে সাবেক সভাপতি ও তার স্ত্রী স্কুলের মাঠে রাখা মাটি ও বালু নিয়ে যাওয়ার সময় আমি তাতে বাধা দিলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং আমার গায়ে জুতা নিক্ষেপ করে। এসময় আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা অফিসারের কাছে বিচার দেয়ার কথা বললে তারা তাদেরকে গালিগালাজ করে এবং বলে যে তারা আমার কি করবে। এসব বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা অফিসারকে একাধিকবার মৌখিক ও লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েও এর কোন প্রতিকার আজও পাইনি।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রনি খান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মো. মজিবুর রহমান খান যখন সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তখন তিনি পুরাতন ভবনের একটি শ্রেণিকক্ষের চাবি শিক্ষক নিলুফা জাহানের কাছ থেকে নিয়ে সেখানে কিছু দিন তার জমির কাজের জন্য আনা শ্রমিকদের রেখেছিলেন। আমি সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব নেয়ার পরে ওই শিক্ষককে তার কাছ থেকে চাবি আনার জন্য বলেছি। আর মাঠে রাখা খড় সরিয়ে নিতে বললে তা সরিয়ে নিয়েছেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করছি।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত মো. মজিবুর রহমান খান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্কুলের পুরাতন ভবনের একটি কক্ষে আমার ছেলের মোটরসাইকেল রাখতো এখন আর রাখে না। ওই কক্ষের চাবি আমি আজই স্কুলের শিক্ষকের কাছে দিয়ে দেবো। গোয়াল ঘরটি স্কুল তৈরির সময় থেকেই ওই জায়গায় আছে। মাঠের খড় সরিয়ে নিয়েছি। খালের বাধ এলাকাবাসী দিয়ে ছিলো।
কাউখালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল হাকিম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শ্রেণিকক্ষ, ভবনের ছাদ ও খেলার মাঠ দখল করে ব্যক্তিগত কোন কাজে ব্যবহার করার কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।