মার্চ থেকেই একটু একটু করে দানা বাঁধতে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন। গত কয়েকদিনে যা আরও জোরালো হয়েছে। সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে উন্নীতকরণ ও স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর দাবিতে একাট্টা শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
আগের পেনশন ব্যবস্থায় অবসরে গেলে এককালীন টাকা পেতেন শিক্ষকরা, যার সুযোগ থাকছে না নতুন স্কিমে। উল্টো কাটা হবে বেতনের একটি অংশ। আর পেনশন গ্রহীতার অবর্তমানে নমিনি আজীবন সুবিধা পেলেও এখন পাবেন সর্বোচ্চ ১৫ বছর।
এক-এগারোর সময় লেফটেন্যান্ট জেনারেলরা নতুন নিয়ম করে নিজেদের বেতন ও গ্রেড বাড়িয়ে নিলে, আমলা ও পুলিশের উচ্চপদস্থরাও তা বাগিয়ে নেন। শুধু নিচে পরে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা। তাই আমলাদের দিকে আঙুল তুলছে শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। সংগঠনটির মহাসচিব ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, সরকারের ভেতর থেকে একটি পক্ষ বাধ্য করেছে এই প্রত্যয় স্কিমটা চালু করার জন্য। একটি দেশে একেক জনের জন্য একেক রকম সুবিধা কেন হবে? সরকারি সুযোগ-সুবিধা আপনারাও চান, আমরাও চাই। সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে না দিলে আমাদের বেতন স্কেল দেন, আমরা আমাদের আত্মমর্যাদা নিয়ে থাকি।
এ বিষয়ে সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান বলেন, সচিবদের সঙ্গে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কোনো তুলনাই হয় না। তারা কোনোভাবেই মুখোমুখি পর্যায়ে অবস্থান করে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। তাদের জন্য পৃথক বেতন কাঠামো তৈরি করা উচিত।
বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা রাষ্ট্রের বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার উৎস। সুপার গ্রেডে না থাকার বিষয়টি শিক্ষকদের আহত করেছে। বিদেশের বেশি বেতন ফেলে যারা দেশের উন্নয়নে কাজ করেন, তাদের সেই প্রাপ্যটা দেয়া উচিত।
তিনি বলেন, বেতন কাঠামোতেও শিক্ষকরা উচ্চ পর্যায়ে নেই। তাই বিষয়টি সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।