তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাজপথে কাকে কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় আমরা আওয়ামী লীগ সেটি জানি। দেশে কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না। দেশে কেউ সহিংসতা করুক সেটি কখনো বরদাস্ত করবো না। রাজনৈতিকভাবে আন্দোলন করতে পারে যে কেউ, তবে নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন নির্ধারণ করবে কখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার (১ অক্টোবর) সচিবালয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
‘বিএনপি বলেছে অক্টোবরে এই সরকারের পতন হবে এবং নতুন সরকার গঠন হবে’- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের পতনের ঘোষণা বহু আগে থেকে দিচ্ছে। ঘোষণা দিয়েছিল গত ডিসেম্বরে পতন হবে। তারেক রহমান দেশে আসবে, বেগম খালেদা জিয়া গুলশান থেকে সমাবেশে চলে আসবেন- এ ঘোষণা দিয়েছিল। এরকম ঘোষণা প্রতি মাসে দেয়, এটি নতুন কোনো ঘোষণা নয়। তবে কয়েকদিন আগে বলেছিল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খালেদা জিয়াকে যদি বিদেশ পাঠানো না হয় তাহলে সরকারকে ক্ষমতায় থাকতে দেবে না। ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে এখন ১২০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে, কিছু তো হয়নি।
তিনি বলেন, দেশে কেউ সহিংসতা করুক সেটি কখনো বরদাস্ত করবো না। রাজনৈতিকভাবে আন্দোলন করতে পারে যে কেউ। সরকারেরও পদত্যাগ যে কেউ চাইতে পারে। একজন ব্যক্তিও চাইতে পারে বা রাজনৈতিক দলও চাইতে পারে। সেই চাওয়ার অধিকার সবার আছে। কিন্তু দিনক্ষণ ঠিক করে সরকারকে টেনে নামিয়ে ফেলবে সেটি বলা সমীচীন নয়। সেটি রাজনৈতিক ভাষা নয়। অর্থাৎ যে ভাষায় তারা কথা বলছে, সে ভাষা ইঙ্গিত দেয় দেশে একটি রাজনৈতিক সহিংসতা তারা করতে চায়। সেটি কাউকে করতে দেওয়া হবে না।
আমি আওয়ামী লীগের একজন নেতা হিসেবে বলছি, আমরা আওয়ামী লীগ রাজপথে কীভাবে কাকে মোকাবিলা করতে হয় সেটি জানি। দেশে কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না। নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন নির্ধারণ করবে কখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কখন নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা হবে এটি এ মাসের শেষে হবে, নাকি আগামী মাসের প্রথম দিকে হবে সেটি নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা করবে। আমরা সবসময় প্রস্তুত নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য। অনেক রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। বিএনপিও আশা করি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে- জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এসেছিলেন। আমরা সাংস্কৃতিক বিষয়সহ দুই দেশের সাংস্কৃতিক গ্রুপের মধ্যে আদান প্রদান যাতে আরও বেশি হয় সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। জাপানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। জাপান আমাদের কাছে সবসময় উন্নয়নের একটি মডেল। গত ৫২ বছর জাপান যেভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিকভাবে অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করেছে, সেজন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। ভবিষ্যতে আমরা আরও ঘনিষ্ঠভাবে যাতে কাজ করতে পারি সে কথা জানিয়েছি।
তিনি বলেন, মীরেরসরাই এবং বঙ্গবন্ধু ইপিজেড বা জাপানিজ ইপিজেড স্থাপন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া মাতারবাড়ি পোর্ট নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জাপানের রাষ্ট্রদূত আগামী নির্বাচনের প্রসঙ্গ টানলে আমি তাকে জানিয়েছি ফ্রি, ফেয়ার এবং ট্রান্সপারেন্ট নির্বাচন হবে। যদিও নির্বাচন করা, স্থগিত করা সেটি হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। কিন্তু সরকারের ফ্যাসিলিটেটরের ভূমিকা থাকে। সেক্ষেত্রে আমরা সর্বাত্মভাবে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবো বলে তাকে বলেছি।
এছাড়া রাজনীতিকে স্থিতিশীল করতে হলে সব রাজনৈতিক দলের কাজ বা দায়িত্ব। ক্রমাগতভাবে নির্বাচন বর্জন করা সেটি কখনো কারও জন্য সমীচীন নয়। সেই কথা আমি তাকে বলেছি এবং একই সঙ্গে দেশে যাতে কোনো রাজনৈতিক সহিংসতা না হয়, যেটা ২০১৩, ১৪, ১৫ খ্রিষ্টাব্দে হয়েছে। সময় সময় বিএনপি করে এবং এখনো করার অপচেষ্টা করছে, উসকানি দিচ্ছে, এ বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, জনগণের অংশগ্রহণে, অনেক রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও সুন্দর এবং সর্বমহলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে বলে আমি তার সঙ্গে আলোচনায় বলেছি।