ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থী প্রমোশনে সিজিপিএ শর্ত শিথিলে ‘ইতিবাচক সিদ্ধান্ত’ হয়েছে। প্রতিটি বর্ষে প্রমোশনের জন্য শিক্ষার্থীদের নূন্যতম সিজিপিএ-২ করার বিষয়ে ঢাবি প্রশাসন ও সাত কলেজের অধ্যক্ষদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে তা বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে সুপারিশের অনুমোদন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
ঢাবি প্রশাসনের সঙ্গে সভা শেষে মঙ্গলবার রাতে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করেন ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ ও সাত কলেজের সমন্বয়ক অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, সাত কলেজের পক্ষ থেকে আমাদের একটা প্রস্তাব ছিল যে বিজ্ঞান অনুষদে যেমন প্রত্যেক বর্ষে সিজিপিএ ২ করে পেলে প্রমোশন পাবেন। তেমনিভাবে সব অনুষদে একইভাবে যদি করা হয়, সে ব্যাপারে আমরা আজকে ইতিবাচকভাবে সম্মত হয়েছি। এটার পরবর্তী যেসব ধাপ রয়েছে সেগুলো অতিক্রম করে, বাস্তবায়নের দিকে যাবে। এজন্য সেই পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য আরো বলেন, এই বিষয়টি আমাদের প্রক্রিয়াধীনই ছিলোই। নির্ধারিত সময়ের মধ্য থেকেই আমরা কিন্তু আলোচনাগুলো চালিয়েছে। শিক্ষার্থীরা কিন্তু এই বিষয়টি অবগত। রোববারে যে ডিনস কমিটির মিটিং ছিলো, সেটিও তারা জানাতো। মঙ্গলবারে যে মিটিং হবে সেটি আমরা জানতে পেরেছি রোববারই। হুট করে তো কিছু করতে পারবো না, সবকিছুতেই নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমাদের এগোতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। হুট করে তো কিছু বলা যাচ্ছে না। যতক্ষণ না আমরা লিখিতভাবে কিছু পাচ্ছি ততোক্ষণ না পর্যন্ত আমরা কিছু কনফার্ম বলতে পারছি না। এটি পরবর্তী একাডেমিক কাউন্সিলে উঠবে এবং সিন্ডিকেটে চূড়ান্ত করা হবে।
তবে কবে নাগাদ একাডেমিক কাউন্সিলে উঠবে এমন প্রশ্নের জবাবে সাত কলেজের সমন্বয়ক বলেন, সামনে মাসের তৃতীয় সপ্তাতে এটি একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে উঠবে বলে আশা করছি।
তিন বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমোশনের ব্যাপারে সাত কলেজের এই সমন্বয়ক বলেন, এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তাছাড়া পাস-ফেল নিয়ে আমাদের তো কোনো প্রস্তাব ছিলো না। আমাদের যে সিজিপিএ শর্ত শিথিলের যে প্রস্তাব ছিলো এটি বাস্তবায়ন হলে, অনেক শিক্ষার্থী যে সমস্যার কথা বলছেন তা সমাধান হয়ে যাবে। তবে যদি উদাহরণ হিসেবে ধরি আমার সিজিপিএ দরকার ২ দশমিক ৫ সেক্ষেত্রে পেয়েছি ২ দশমিক ৩৮, এখন বিজ্ঞান বিভাগে প্রতি বছরের প্রমোশনের জন্য সিজিপিএ ২ করে পেতে হয়। এখন আমাদের যে প্রস্তাব সেটি বাস্তাবায়ন হলে শিক্ষার্থীরা এই জটিলতারও সমাধান পাবে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রথম বর্ষ থেকে দ্বিতীয় বর্ষে প্রমোশন পেতে সিজিপিএ ২ প্রয়োজন, দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় বর্ষে প্রমোশন পেতে সিজিপিএ ২ দশমিক ২৫ এবং তৃতীয় থেকে চতুর্থ বর্ষে প্রমোশন পেতে ২ দশমিক ৫ প্রয়োজন। তা না হলে আবারও আগের বর্ষে থাকতে হয়। তাই তারা এই সিজিপিএর শর্ত শিথিল করে তিন বিষয় পর্যন্ত মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন চান। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিজ্ঞান, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভেদে প্রমোশন পেতে রয়েছে পৃথক পৃথক বৈষম্য।