সাবইন্সপেক্টরকে বিনা ওয়ারেন্টে তল্লাশির ক্ষমতা দেয়া বড় উদ্বেগের - দৈনিকশিক্ষা

সাইবার নিরাপত্তা আইনসাবইন্সপেক্টরকে বিনা ওয়ারেন্টে তল্লাশির ক্ষমতা দেয়া বড় উদ্বেগের

নিজস্ব প্রতিবেদক |

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনি প্রবেশ, কম্পিউটার ও কম্পিউটার সিস্টেমে ক্ষতি, সাইবার সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধের জন্য অজামিনযোগ্য ৪টি ধারা বহাল রাখার মধ্য দিয়ে বহুল আলোচিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। প্রসঙ্গত, বহুল বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে প্রায় একই আদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন করছে সরকার।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল আইনে জামিনযোগ্য ধারা বাড়ানোর জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, যেসব অপরাধের সংজ্ঞা ও শাস্তির কথা ফৌজদারি অপরাধে উল্লেখ আছে তা সাইবার আইনে সংযুক্ত করা উচিত নয়। এছাড়াও আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি অফিসিয়েল সিক্রেসি আইন বিলুপ্তির কথা। কিন্তু সাইবার আইনে অফিসিয়াল সিক্রেসি আইনকে অন্তর্ভুক্ত করায় উদ্বেগ রয়েছে। তবে আইনে সাবইন্সপেক্টর পদমর্যাদার পুলিশকে বিনা ওয়ারেন্টে তল্লাশির ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এখানেই সবচেয়ে বড় উদ্বেগ রয়েছে। এতে আইনের অপপ্রয়োগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই অংশটির অবলোপন দরকার।

এর আগে, গত ৭ আগস্ট সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, সংসদের আগামী অধিবেশনে এই আইন পাস করা হবে। নতুন এই আইন মন্ত্রিসভার নীতিগত অনুমোদনের পর উদ্বেগ জানিয়ে আসছে সাংবাদিক সংগঠনগুলো ও অধিকারকর্মীরা। প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া নিয়ে অংশীজন ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ ছিল, আইনে সাজা কিছু কমানো ও ধারা জামিনযোগ্য করা ছাড়া বিষয়বস্তুতে তেমন কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। তা মানুষের হয়রানি কমাবে না। ৯ আগস্ট আইনটির খসড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে অংশীজনদের মতামত চাওয়া হয়। এ জন্য ১৪ দিন সময় দেয়া হয়। প্রায় ৫০০টি মতামত জমা পড়ে। বিএনপির অভিযোগ, এই আইন ‘নতুন বোতলে পুরনো মদ’ আনছে। তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আগে বলেছিলেন, এই আইনের সমালোচনা যারা করছেন তারা তা না জেনেই করছেন। 

অজামিনযোগ্য ধারা : ১৭ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনি প্রবেশ করলে ৩ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দণ্ডিত হবেন। কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে ক্ষতিসাধন বা বিনষ্ট বা অকার্যকর করেন বা এসব করার চেষ্টা করেন, তবে ৬ কারাদণ্ড বা ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হবে। ১৯ ধারায় কম্পিউটার, কম্পিউটার  

সিস্টেম ইত্যাদির ক্ষতিসাধন ও দণ্ডের বিষয়ে বলা আছে। কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক থেকে কোনো উপাত্ত, উপাত্ত-ভাণ্ডার, তথ্য বা এর উদ্ধৃতাংশ সংগ্রহ করেন বা স্থানান্তরযোগ্য জমাকৃত তথ্য-উপাত্তসহ ওই কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কের তথ্য সংগ্রহ করেন বা কোনো উপাত্তের অনুলিপি বা অংশ বিশেষ সংগ্রহ করলে বা কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোনো ধরনের সংক্রামক, ম্যালওয়্যার বা ক্ষতিকর সফটওয়্যার প্রবেশ করালে বা প্রবেশ করানোর চেষ্টা করলে, তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, উপাত্ত বা কম্পিউটারের উপাত্ত-ভাণ্ডারের ক্ষতি করলে বা ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করলে বা উক্ত কম্পিউটার, সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে রক্ষিত অন্য কোনো প্রোগ্রামের ক্ষতি করলে বা করার চেষ্টা করলে বা কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে কোনো বৈধ বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে কোনো উপায়ে প্রবেশ করতে বাধা সৃষ্টি করলে বা বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাও অপরাধ হবে। এর বাইরে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রেরক বা গ্রাহকের অনুমতি ছাড়া কোনো পণ্য বা সেবা বিপণনের উদ্দেশ্যে, স্পাম উৎপাদন বা বাজারজাতকরণ বা করার চেষ্টা করেন বা অযাচিত ইলেক্ট্রনিক মেইল পাঠালে অথবা কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ বা কারসাজি করে কোনো ব্যক্তির সেবা গ্রহণ বা ধার্যকৃত চার্জ অন্যের হিসাবে জমা করলে বা করার চেষ্টা করলে ৭ বছর কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হবে। ২৭ ধারায় সাইবার সন্ত্রাসী কার্য সংঘটনের অপরাধের জন্য ১৪ বছর কারাদণ্ড বা ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

৩৩ ধারায় হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ডের বিষয়ে বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি হ্যাকিং করেন, তাহলে সেটি একটি অপরাধ। এজন্য অনধিক ১৪ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। হ্যাকিংয়ের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে- কম্পিউটার তথ্য ভাণ্ডারের কোনো তথ্য বিনাশ, বাতিল, পরিবর্তন বা এর মূল্য বা উপযোগিতা হ্রাসকরণ বা অন্য কোনোভাবে ক্ষতিসাধন। অথবা নিজ মালিকানা বা দখলবিহীন কোনো কম্পিউটার, সার্ভার, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশের মাধ্যমে তার ক্ষতিসাধন।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032391548156738