সারাজীবন মানুষের কল্যাণেই নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ - দৈনিকশিক্ষা

সারাজীবন মানুষের কল্যাণেই নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

সারাজীবন দেশের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। প্রভাবশালী আর অভিজাত পরিবারের সন্তান হয়েও খুব সাধারণ জীবন-যাপন করতেন তিনি। মরণোত্তর দেহদানের মাধ্যমে নিজের শরীরকেও মানুষের কল্যাণে বিলিয়ে দেয়ার কথা বলেছেন। 

তবে জানা যায়, দেহদানের বিষয়টি তিনি বললেও এ বিষয়ে কোনো লিখিত ডকুমেন্ট নেই। সেক্ষেত্রে যে আইনী প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হয় তা শেষ করে যেতে পারেননি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।  

এখন জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে দাফন করা হবে নাকি দেহদান করার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে তা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। মারা যাওয়ার পর মরদেহ বারডেমের হিমঘরে রাখা হয়েছে। সেখানেই সব আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশ ওষুধ নীতির অন্যতম প্রণেতা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮১ বছর। তার মৃত্যুতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ও নাগরিক সমাজে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মহান মুক্তিযুদ্ধে হাসপাতাল গড়ে তোলার মাধ্যমে যুদ্ধকালীন আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ। অনেকের প্রাণ বাঁচিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের পর চিকিৎসা গবেষণা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানা ধরনের কাজ করেছেন। জাতীয় ঔষধ নীতি ও জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নেও বড় ভূমিকা রেখেছেন তিনি। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের মাধ্যমে সুলভে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেছিলেন তিনি।

সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলে যুক্ত না হলেও আজীবন বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ। গণমুখী বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি সংহতি-সমর্থন দিয়ে গেছেন। জাতীয় জীবনে অবদান রাখার জন্য ১৯৭৭ সালেই স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি।

কিডনি সমস্যার পাশাপাশি বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর কেন্দ্রে গত সোমবারই (১০ এপ্রিল) লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছিলো ডা. জাফরুল্লাহকে। সেখানে মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

জীবনের শেষ বছরগুলোতে জটিল কিডনি রোগে ভুগছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তার শেষ ইচ্ছা ছিল, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালেই তিনি চিকিৎসা নিয়ে মরতে চান। উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলেও তিনি রাজি হননি। 

২০২০ সালে কোভিড মহামারির করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সেই সময়ে বয়স ও স্বাস্থ্য বিবেচনায় তার অবস্থা ছিল বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তখন তাকে কিডনি অকেজো হয়ে যাওয়ায় কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হলে তিনি এক বাক্যে নাকচ করে দিয়েছেন। 

কেন সেই পরামর্শে রাজি হননি জানতে চাইলে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘বাইরে করাব না। বিদেশে যাব না। আমরা একটি কিডনি প্রতিস্থাপন কেন্দ্র করতে যাচ্ছি। করোনা না হলে এত দিনে প্রায় শুরু হতো।’

এর আগে ২০১৪ সালের দিকে তার কিডনিতে প্রথম সমস্যা শুরু হলে বিদেশি বন্ধুরাও তাকে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেটি স্মরণ করিয়ে দিলে একটি গণমাধ্যমকে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘হ্যাঁ। আমাকে হার্ভার্ড বলেছিল, বিনা পয়সায় কিডনি প্রতিস্থাপন করে দেবে। আমি বলেছি, তুমি বাকিদের করবা? খালি আমার তো করবা। আমি বলেছি, আমি আমার দেশে চিকিৎসা করাতে চাই, চিকিৎসা উন্নত করতে চাই। সবাই যেন সুযোগটা পায়।’

মানুষ যেনো সহজে প্রতিস্থাপনের জন্য কিডনি পেতে পারেন সেজন্য তিনি আইনের পরিবর্তন চেয়েছিলেন। পাশাপাশি তার হাতে গড়ে ওঠা গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ১০০ শয্যার কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট তৈরি করেছিলেন। ঐ ইউনিটে নিজেই ডায়ালাইসিস করাতেন। ইউনিটটি তিনি করেছিলেন কম মূল্যে সাধারণকে মানুষকে সেবার সুযোগ করে দিতে। একটি ক্যানসার হাসপাতাল করার ইচ্ছাও তার ছিলো।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরিবেশ এখনও হয়নি: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরিবেশ এখনও হয়নি: শিক্ষামন্ত্রী দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে : সেনাপ্রধান - dainik shiksha দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে : সেনাপ্রধান তিন-চার দিনের মধ্যে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী - dainik shiksha তিন-চার দিনের মধ্যে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফেসবুক-টিকটক আপাতত বন্ধ থাকছে - dainik shiksha ফেসবুক-টিকটক আপাতত বন্ধ থাকছে পিএসসির সব পরীক্ষা ৩১ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত - dainik shiksha পিএসসির সব পরীক্ষা ৩১ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সবার কাছে নাশকতার ছবি-ভিডিয়ো ফুটেজ চেয়েছে পুলিশ - dainik shiksha সবার কাছে নাশকতার ছবি-ভিডিয়ো ফুটেজ চেয়েছে পুলিশ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032100677490234