সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বাড়ছে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা। সরকারি হিসেবে গত মঙ্গলবার থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত তাদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাত লাখের মতো। তবে স্থানীয়দের দেয়া তথ্যমতে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বুধবার জানান, মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলার এক হাজার ৩২৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এতে ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৭ জন মানুষ বন্যা আক্রান্ত। ৫৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ১৭ হাজার ২৮৫ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তবে এ সংখ্যা দ্বিগুন হতে পারে। এদিকে মহানগরের ৮০টি আশ্রয় কেন্দ্রে আরও কয়েক হাজার বাসিন্দা আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে পানিবন্দি মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নৌকায় করে পাঠানো হচ্ছে ত্রাণ সামগ্রী। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অনেক গ্রাম ও আশ্রয় কেন্দ্রের মানুষ ত্রান সাহায্য নিচ্ছেন ৩৩৩ ও ৯৯৯ জরুরি নম্বরে কল করে। জাতীয় এ সেবা নম্বারে কলেরভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পাঠানো হচ্ছে খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ওষুধ, শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্য।
গত মঙ্গলবার রাতে সীমান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দেন বন্যার্তদের মাঝে।
তিনি জানান, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় তরুণ-যুবকদের অংশগ্রহণে সংগঠিত স্মার্ট কুইক রেসপন্স টিম বন্যার্তদের জন্য কাজ করছে। ইতোমধ্যে ৮০০টি পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দেয়া হয়েছে। উপজেলার বিছনাকান্দি, ভিতরেরগুল ও বগাইয়া হাওরসহ কয়েকটি বন্যা কবলিত এলাকায় এসব ত্রাণ দেয়া হয়। একইভাবে কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও জৈন্তাপুরেও ত্রাণ দেয়া হচ্ছে।
সিলেটে গত মাসের শেষ দিকে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে পানি নেমে যায়। চলতি মাসে আবার বন্যার কবলে পড়ে সিলেট। বিশেষ করে ঈদের দিন গত সোমবার ভোররাত থেকে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয় নগরীর অধিকাংশ এলাকাসহ সিলেটের ৭টি উপজেলা।
এদিকে, ধারাবাহিকভাবে ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের আরো বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যাকবলিত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ১২ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।