নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে ৫০ বছর পার করছে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী তেজগাঁও মহিলা কলেজ। এ উপলক্ষে ‘গৌরবের ৫০ বছর’ শীর্ষক সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠান শনিবার উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচিতে এ অনুষ্ঠান হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। অনুষ্ঠানে কলেজটি সরকারিকরণের দাবি তোলা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, জগন্নাথ কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাইদুর আমাকে একদিন তার বাসায় ডেকে পাঠালেন। তিনি আমাকে এই এলাকায় একটি মহিলা কলেজ করার প্রস্তাব দেন। তখন তিনি তেজগাঁও এলাকায় একটি জায়গা দিতে বলেন। তাকে আমি আশ্বস্থ করলাম, যতটুক পারি আমি করার চেষ্টা করব। সেখানে তখন অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। পরে মনিপুরী পাড়ায় কলেজটির কার্যক্রম শুরু হয়। সেখানে বছর খানেক চলে কলেজটি। এভাবেই নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে কলেজটি আজ এতদূর এসেছে।
তিনি আরো বলেন, কলেজটি যাত্রার পর থেকে নানা ধরনের প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছিল। এই প্রতিকূলতা পেরিয়ে যখন দেখি অনেক অনেক শিক্ষার্থী এ কলেজে আসছেন, শিক্ষা গ্রহণ করছেন, সত্যি অনেক ভালো লাগে। আমরা ধীরে ধীরে একটি সুন্দর কলেজ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি। দিন-দিন কলেজের সক্ষমতাও বেশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আসলে যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা এই মহাবিদ্যালয় শুরু করেছিলাম তা পরিপূর্ণতা পেয়েছে।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালযয়ের অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ ধারণ করে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। তথ্য-প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার, নিয়মিত ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা পড়াশোনার পাশাপাশি বিশ্বে কোথায় কি হচ্ছে তা যদি একজন শিক্ষার্থী খোঁজ রাখেন, আমি বিশ্বাস করি এই শিক্ষার আলোয় আলোকিত প্রতিটি শিক্ষার্থী বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আসাদুল হক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর অধ্যক্ষ মো. আব্দুর রশিদ, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক জিল্লু, কলেজটির অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও উপাধ্যক্ষ হাজেরা পারভীন।
অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, আমরা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত শিক্ষার্থীদের পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে নিয়োগ দিতে চাই না। আমরা চাই, মানসম্মত শিক্ষা।
কলেজটির সভাপতি আবু আহমেদের সমাপনী বক্তেব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের ১ম পর্বের সমাপ্তি হয়। এরপর দ্বিতীয় অংশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কলেজটির সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।