জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রমজানেও ক্লাস-পরীক্ষা চালু রয়েছে। প্রায় ২০ রমজান পর্যন্ত নিয়মিত কার্যক্রম চালু থাকলেও ডাইনিং-ক্যান্টিনে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় সেহরি-ইফতারে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। বটতলা এলাকায় অধিকাংশ খাবারের দোকান বন্ধ রেখেছেন দোকানিরা । তাদের অভিযোগ পর্যাপ্ত ক্রেতা না থাকায় দোকান বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এসব দোকানের বিরুদ্ধে রমজানে শিক্ষার্থীদের কাছে অতিরিক্ত দামে খাবার বিক্রির অভিযোগ করছেন শিক্ষার্থীরা।
বর্তমানে চালু থাকা মোট ১৯টি আবাসিক হলের মধ্যে আল-বেরুনী হল, আ ফ ম কামাল উদ্দিন হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শহীদ সালাম-বরকত হল, রফিক-জব্বার হলের ডাইনিংয়ে সেহরির কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তবে মওলানা ভাসানী হল, মীর মশাররফ হোসেন হল, শেখ হাসিনা হলসহ মেয়েদের সবকটি হলে সেহরির ব্যবস্থা আছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ- ডাইনিংয়ে প্রতিদিন প্রায় একই ধরনের মেন্যু পরিবেশন করা হয়। এতে পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে না তাদের। অনেকেই অতিরিক্ত দামে ক্যান্টিনে খাবার কিনে খেতে বাধ্য হচ্ছেন। এ ছাড়া ক্লাস-পরীক্ষা চালু থাকার পরও বটতলা এলাকায় অধিকাংশ খাবারের দোকান বন্ধ রেখেছেন দোকানিরা। এতে ভিন্নধর্মী শিক্ষার্থীদেরও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা, সালাম-বরকত হলের মোড়, রফিক-জব্বার হলসংলগ্ন দোকানে সেহরির ব্যবস্থা থাকলেও ভোররাতে নারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে সেখানে যাওয়া অনেকটাই অসম্ভব।
বিশ^বিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রমজানে সেহরি ও রাতের খাবারের তুলনায় ইফতার বিক্রিতেই বেশি ঝোঁক ব্যবসায়ীদের। রাতের খাবার ও সেহরির জন্য দুটি দোকান চলমান দেখা গেছে। দোকানিদের অভিযোগ- পর্যাপ্ত ক্রেতা না থাকায় দোকান বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এসব দোকানের বিরুদ্ধে রমজানে শিক্ষার্থীদের কাছে অতিরিক্ত দামে খাবার বিক্রির অভিযোগ করছেন শিক্ষার্থীরা।
সহযোগী অধ্যাপক ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, রমজানে খাবারের দাম নিয়ন্ত্রণে আমরা দোকানগুলোতে নতুন মূল্যতালিকা ঝুলিয়ে দিয়েছি। আমরা সার্বক্ষণিক মনিটর করছি। দোকানদাররা এটা না মানলে জরিমানা করা হবে। দাম-মান ঠিক না থাকলে শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে সরাসরি অভিযোগ করতে পারবেন। তবে হলের ডাইনিং-ক্যান্টিন আমাদের আওতার বাইরে।
প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি ও অধ্যাপক নিগার সুলতানা বলেন, আমার জানামতে মেয়েদের সবগুলো হলে সেহরিতে ডাইনিং চালু রয়েছে। শুধু যেসব হলে গ্যাসের সুবিধা নেই, সেগুলোতে ডাইনিং চালু করা সম্ভব হয়নি। এর পরও শিক্ষার্থীরা কোনো সমস্যা আমাদের কাছে জানালে ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১ এপ্রিল থেকে ছুটিতে যাওয়ার কথা। আপাতত এটাকে ধরে নিয়েই ক্লাস-পরীক্ষা চলমান থাকবে। শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা আমাদের নজরে এসেছে। যেহেতু ডাইনিং-ক্যান্টিন হল প্রভোস্টদের অধীনে পরিচালিত, আশা করি শিক্ষার্থীদের জন্য সেখানে তারা উপয্ক্তু ব্যবস্থা নেবেন।