শিক্ষাক্ষেত্রে কেবল এশিয়াতেই নয়, সমগ্র বিশ্বে নিজের অবস্থান শক্ত করে নিয়েছে সৌদি আরব। শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে সৌদি সরকার থেকে বিপুল পরিমাণ বৃত্তি দেওয়া হয়। বৃত্তিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে সৌদি আরবের অবস্থান শীর্ষে। এর মধ্যে অন্যতম হলো কিং ফাহাদ বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারশিপ। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এখানে স্কলারশিপ নিয়ে বিনা মূল্যে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করার সুযোগ পাবেন। এই বৃত্তির লক্ষ্য হলো, ইসলামের সুমহান বিশ্ব শান্তির বাণীকে সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া, আরবি ভাষা ও সংস্কৃতির সংস্পর্শে নিয়ে আসা এবং একদল যোগ্য বাহিনী গঠন করা, যাঁরা প্রশাসনিক ও বৈজ্ঞানিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি অর্জনে সহায়তা করবেন।
সুযোগ-সুবিধা
সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে অধ্যয়নের সুযোগ।
পরীক্ষার ফি মওকুফ।
শিক্ষার্থীদের মাসিক ভাতা হিসেবে ৪ হাজার সৌদি রিয়াল দেওয়া হবে; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৯০ হাজার টাকা।
আবাসনব্যবস্থা।
স্বাস্থ্যবিমা এবং বিনা মূল্যে শিক্ষাসামগ্রী প্রদান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত রেস্টুরেন্টগুলোতে শিক্ষার্থীদের খাবারের বিলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট হারে ভর্তুকি দিয়ে থাকে।
ভালো ফলাফল অর্জন করলে নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট হারে অতিরিক্ত স্টাইপেন্ড প্রদান।
গবেষণা ও বই প্রকাশের সুযোগ।
প্রতিবছর একবার নিজ দেশ থেকে ঘুরে আসার জন্য বিমানে আসা-যাওয়ার খরচ।
প্রয়োজন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ও সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধের ব্যবস্থা।
বৃত্তি বিভাগের পক্ষ থেকে হজ, ওমরাহ আদায় করানো হয় এবং বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থানে শিক্ষাসফরে নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, এখানে বৃত্তিতে পড়াকালে বাইরে কোনো প্রকার পার্টটাইম বা ফুলটাইম কাজ করা নিষিদ্ধ। আইনের হাতে ধরা পড়লে জেল বা জরিমানা হতে পারে এবং পড়াশোনা বন্ধ করে দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
আবেদনের যোগ্যতা
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হতে হবে।
ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হতে হবে।
পিএইচডির জন্য দুই বছরের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে এবং স্নাতকোত্তরের জন্য চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে।
ভর্তির জন্য সিজিপিএ সর্বনিম্ন ৩.০০ থাকতে হবে ৪.০০-এর মধ্যে।
একাডেমিক ফলাফল ভালো হতে হবে।
মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ৩০ বছর এবং পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য ৩৫ বছর বয়সের মধ্যে হতে হবে।
আবেদনকারী যদি সৌদি আরবের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে বৃত্তিপ্রাপ্ত হন, তাহলে তাঁর আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
ছাত্রীদের বৃত্তিতে আবেদনের জন্য শর্ত হলো, তাঁদের কোনো মাহরাম সৌদি আরবের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী হতে হবে, অথবা ছাত্রীর সঙ্গে বৃত্তির জন্য আবেদনকারী হতে হবে বা সৌদিতে বৈধ ইকামাধারী অবস্থানকারী হতে হবে।
শিক্ষার্থী যদি কোনো কারণে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বরখাস্ত হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁর আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
সৌদি আরবের স্থানীয় আইন বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অবশ্যই তা মানতে হবে।
সৌদি আরবের আইনের বাইরে কোনো ধরনের রাজনীতি, সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা অবলম্বন বা আলোচনাও করা যাবে না।
বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তাঁদের বৃত্তিকালীন নির্দিষ্ট কোর্স সম্পন্ন হলে দেশে ফেরত চলে যেতে হবে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
জাতীয় পরিচয়পত্র।
একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট।
তিনটি রেফারেন্স লেটার।
পাসপোর্ট সাইজের ছবি। পেছনে সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের টুপি ও চশমা ছাড়া ছবি হতে হবে।
জীবনবৃত্তান্ত।
জন্মনিবন্ধনপত্র।
ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সনদ। (আইইএলটিএস/জিআরই/টোফেল)।
যাঁরা জন্মগতভাবে মুসলিম না, তাঁদের ইসলাম গ্রহণের সনদ (যদি প্রযোজ্য হয়)।
ছাত্রীদের আবেদনের ক্ষেত্রে মাহরাম অভিভাবকের ইকামার কপি।
মেডিকেল ফিটনেসের সনদ নিতে হবে।
নাগরিকত্ব সনদ।
নিরাপত্তাসংক্রান্ত পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
প্রতিটি ডকুমেন্ট আরবি অনুবাদ ও নোটারি করা হতে হবে।