দৈনিক শিক্ষাডটকম, ফরিদপুর : ফরিদপুরের নগরকান্দার চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র আলাউদ্দিন মাতুব্বর অন্তর (১৪) হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসি ও আরো ৩ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের অন্য ধারায় যাবজ্জীবন এবং বাকি আসামিদের একটি ধারায় ১৪ বছরের এবং অপর একটি ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও সর্বমোট এক লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পরে আদালত থেকে হাজতখানায় নেয়ার সময় লিফটের মধ্যে আসামিরা পরস্পরে কিলাকিলিতে লিপ্ত হয়।
রায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন জেলার নগরকান্দার চর মানিকদী গ্রামের হাবিব বেপারির ছেলে মাহাবুব আলম, পিপরুল গ্রামের আলতাফ মাতুব্বরের ছেলে কামাল মাতুকার ও দক্ষিণ বিলনালিয়া গ্রামের মোবারক মাতুব্বরের ছেলে খোকন মাতুব্বর। তাদের প্রত্যেককে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৭ ধারায় ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৮ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং দন্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হয়।
এছাড়া এ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- পাগলপাড়া গ্রামের দুলাল শেখের ছেলে আশরাফ শেখ ও আজিজুল শেখ এবং দক্ষিণ বিলনালিয়া গ্রামের আক্তারুজ্জামানের ছেলে সুজন মাতুব্বর। তাদের প্রত্যেককে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৭ ধারায় ১৪ বছর এবং ৮ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এবং প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ডে দণ্ডিত করা হয়। এছাড়া দন্ডবিধি ৩০২/৩৪ ধারায় তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এবং ১ লাখ টাকা করে অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়। রায় ঘোষণার সময় আজিজুল শেখ ছাড়া বাকি পাঁচ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশ পাহারায় তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় নিহত অন্তরের মা জান্নাতি বেগম আবেগে বাকরুদ্ধ হয়ে যান। তিনি বলেন, সন্তানের হত্যাকারীদের ফাঁসির আদেশ দেয়ায় আমি সন্তুষ্ট। আমি চাই এই রায় অবিলম্বে কার্যকর করা হোক।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) স্বপন কুমার পাল জানান, দীর্ঘ সাক্ষ্য শুনানি শেষে মামলার রায় ঘোষণা করা হলো। এর মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলো।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট অনিমেষ রায় ও অ্যাডভোকেট বিমল তুলশিয়ান বলেন, এ রায়ে তারা সন্তুষ্ট নন। তারা উচ্চ আদালতে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।