গাজীপুরে এক স্কুলে অগ্নিকাণ্ডে জিনিসপত্রসহ তিনটি কক্ষ পুড়ে গেছে।
সোমবার ভোররাতের দিকে সদর উপজেলার বানিয়ারচালার জলপাইতলা মডেল স্কুলটির বই, খাতা, আসবাবপত্র ও কয়েকটি ফ্যানসহ বিভিন্ন জিনিসপত্রসহ তিনটি কক্ষ পুড়ে গেছে।
পার্শ্ববর্তী হাজি ফজলুল হক প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতাদের সঙ্গে এ স্কুলের প্রতিষ্ঠাদের জমি নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে এ আগুন দেওয়া হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
শ্রীপুর ফায়ার স্টেশনের ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর মিয়া রাজ উদ্দিন জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে তারা ওই আগুনের খবর পান। ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই আগুন নিভিয়ে ফেলেন এলাকাবাসী।
“আগুনে ওই স্কুলের আবসবাবপত্র ও বই-খাতাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়ে গেছে। তবে আগুনের কারণ তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না।”
এ স্কুল প্রতিষ্ঠাতা আকবর আলী পালোয়ান জানান, রোববার রাতের খাবার খেয়ে সবাই ঘুমিয়ে পড়ে।
“রাত ৩টার দিকে এলাকাবাসীর ডাকাডাকিতে আমরা জেগে জলপাইতলা স্কুলে আগুন দেখতে পাই।”
স্থানীয় পুলিশ ও ফায়ার স্টেশনে খবর দেওয়া হয়। তবে তারা ঘটনাস্থলে আসার আগেই আগুন নেভিয়ে ফেলে এলাকাবাসী।
তিনি জানান, প্রতিবেশী মো. গিয়াসউদ্দিন এবং তার ভাই মুজিবুর রহমানের সঙ্গে জমি নিয়ে তাদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। জলপাইতলা মডেল স্কুলের পাশেই গিয়াস উদ্দিনের প্রতিষ্ঠিত হাজি ফজলুল হক প্রি-ক্যাডেট স্কুল।
এসব বিরোধের জেরেই গিয়াস উদ্দিনের লোকজন গত রাত ৩টার দিকে আগুন দিয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, গত ২০ এপ্রিল সন্ধ্যায় জমির বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষরা আমার ছেলে হাবিবুর রহমান এবং ভগ্নিপতি আজিজুল হকের উপর হামলা চালায়।
এ ঘটনায় ৩ মে তিনি বাদী হয়ে গিয়াসউদ্দিন ও তার ভাই মুজিবুর রহমানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে হাজি ফজলুল হক প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, গত ২০ এপ্রিল সন্ধ্যায় আকবর আলী পালোয়ানের লোকজন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বানিয়ার চালা এলাকায় শত্রুতার জেরে আমার ও ছোটভাইয়ের উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
এ ব্যাপারে ২৩ এপ্রিল মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন।
ওই মামলায় জলপাইতলা মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আশরাফুল আলম ১০ নভেম্বর গ্রেপ্তার হন। তিনি কারাগারে রয়েছেন।
“আমাদের ফাঁসাতে নিজেরাই তাদের জলপাইতলা মডেল স্কুলেটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।”
অগ্নিকাণ্ডের সত্যতা স্বীকার করে জয়দেবপুর থানার ওসি জাবেদুল ইসলাম জানান, উভয়পক্ষের মধ্যে পূর্বশত্রুতার জেরে মারামারির ঘটনায় উভয়পক্ষ দুইটি মামলা করেছে। একটি মামলায় সম্প্রতি জলপাইতলা স্কুলের প্রধান শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়।
“তবে এর জেরেই মো. গিয়াস উদ্দিন ও তার কোনো লোকজন জলপাইতলা স্কুল আগুন দিয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে মামলা হয়নি বলেও জানায় পুলিশ।