কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার বড়গাংদিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে কাউকে না জানিয়ে তিন পদে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক আজিজুল হকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। এমন পরিস্থিতিতে স্কুলে গোপনে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, অফিস সহায়ক ও পরিছন্নতাকর্মী পদে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা বনচাল হয়ে গেছে। ওই নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত গোপনে স্কুলে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছিলো। অভিযোগকারী জাহাঙ্গীর আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ বাণিজ্য করছেন প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক। তিনি গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিলেন। ফলে অনেক আগ্রহী প্রার্থী আবেদন করতে পারেননি। এমনকি, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত পত্রিকার কপি প্রধান শিক্ষকের কাছে বেশ কয়েকজন আগ্রহী প্রার্থী চাইতে গেলেও দেয়া হয়নি।
স্থানীয়রা বলেন, আমাদের গ্রামের কেউ এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ব্যাপারে জানে না। গ্রামের অনেক যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করতে পারেনি। নিয়োগ বাণিজ্য করার জন্য গোপনে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করিয়ে প্রধান শিক্ষক শুধু নিজের পছন্দের ব্যক্তিদের আবেদন করিয়েছেন।
জানা গেছে, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ ডিসেম্বর দৈনিক মানবজমিন ও স্থানীয় দৈনিক বজ্রপাত পত্রিকায় কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, অফিস সহায়ক ও পরিছন্নতাকর্মী পদে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। স্থানীয়রা বলছেন, এ পত্রিকাগুলো দৌলতপুরে আসে না। নিয়ম অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি নোটিশ বোর্ড ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে টানানো হয়নি। আবেদনের শেষ তারিখ ছিলো গত ৩ জানুয়ারি।
বিদ্যালয়ের বিদ্যোৎসাহী সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আল মামুন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও এ সংক্রান্ত কোনো বিষয় আমাকে জানানো হয়নি। ম্যানেজিং কমিটির অনেক সদস্যদের না জানিয়ে গোপনে নিয়োগ বাণিজ্য করার চেষ্টা করছে। ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, সরকারি নিয়মনীতি অনুসরণ করে বৈধভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি করা হোক।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বা নিয়োগের ব্যাপারে আমি কিছুই জানতাম না। এখন শোনা যাচ্ছে গোপনে নিয়োগ বাণিজ্য করার চেষ্টা করে ধরা খেয়েছে হেড স্যার।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বৈধভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পত্রিকা দুটি এলাকায় আসে না। বিষয়টি অনেকে জানে না। আমি যে সার্কুলার দিয়েছি, সেটা সাফিসিয়েন্ট হয়নি। আমি নতুন করে আবারও সার্কুলার দেবো। তারপর পর্যাপ্ত দরখাস্ত জমা হলেই নিয়োগ দেয়া হবে। সরকারি বিধিনিয়ম অনুযায়ী বৈধভাবে, যৌথভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবো।
দৌলতপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সর্দার মোহম্মদ আবু সালেক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সরকারি নিয়মনীতি অনুসরণ করে ম্যানেজিং কমিটির বৈঠকের মাধ্যমে পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলেছি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
দৌলতপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আব্দুল জব্বার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।