দৈনিক শিক্ষাডটকম, কিশোগঞ্জ : কিশোগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় একটি বিদ্যালয়ের সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে এমপিওভুক্তির আবেদনের অভিযোগ উঠেছে কথিত প্রধান শিক্ষক মো. গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি উপজেলার কোদালিয়া সহরুল্লাহ ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বিদ্যালয়ের সভাপতি আতাউল্লাহ সিদ্দিক মাসুদ বিদ্যালয়ে চত্বরে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য সাইদুর রহমান, আবদুল মোমেন, সদস্য আবদুল মাজহারুল হক এংরাজ, সহকারী শিক্ষক হাফিজ উল্লাহ, মাসুদ আহমেদ, আলী হোসেন, মনি রানী গুন, তাসমিন আক্তার, চন্ডিপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. ইব্রাহিম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সভাপতি আতাউল্লাহ সিদ্দিক মাসুদ বলেন, ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির তৎকালীন সভাপতি মো. মাজহারুল হক মাসুদ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমানকে বাদ দিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে গোলাম মোস্তফা নামের এক ব্যক্তিকে বাইরে থেকে এনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেন। এ ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ক্ষুব্ধ হয়ে এ নিয়োগের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ সহকারী জেলা জজ আদালতে মামলা করেন। ফলে গোলাম মোস্তফা প্রধান শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ে আর যোগদান করতে পারেননি। মামলাটি বর্তমানে চলমান।
এছাড়াও এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করা হয়েছে। একাধিক মামলার পরেও হাল ছাড়েননি গোলাম মোস্তফা। সাবেক সভাপতি মো. মাজহারুল হক মাসুদের যোগসাজসে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে তার স্বাক্ষরিত একটি পেশাগত দক্ষতার সনদ ও প্রত্যয়নপত্র নেন গোলাম মোস্তফা। পরে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে বর্তমান সভাপতি আতাউল্লাহ সিদ্দিক মাসুদের স্বাক্ষর জাল করে একাধিক কাগজপত্র তৈরি করে গোলাম মোস্তফা তার নাম এমপিওভুক্তির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরে আবেদন করে এমপিওভুক্ত হন তিনি। বিষয়টি জানতে পেরে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। পরে উচ্চ আদালত চলতি বছরের ১৮ মার্চ গোলাম মোস্তফার এমপিওভুক্তির আদেশ স্থগিত করেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি আতাউল্লাহ সিদ্দিক মাসুদ আরও বলেন, আমি ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এই বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদে রয়েছি। অথচ সাবেক সভাপতি মাজহারুল হক মাসুদ ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে কি করে তার স্বাক্ষরে গোলাম মোস্তফাকে পেশাগত দক্ষতার সনদ ও প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন? এছাড়াও গোলাম মোস্তফা ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে আমার স্বাক্ষর জাল করে তার নাম এমপিওভুক্তির জন্য মাউশিতে আবেদন করেছেন। আমি এদের দুজনের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত গোলাম মোস্তুফা বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। বর্তমান সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে এমপিওভুক্তির আবেদনের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে এড়িয়ে যান।