দুই দফা সময় বাড়ানোর পর ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল হজ নিবন্ধনের সুযোগ। তবে এবার সৌদি আরবের সম্মতি পাওয়ায় আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে এই সুযোগ। হজ গমনেচ্ছুরা আগামী ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রাক নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইনও এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব আবু তাহির স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় থেকে হজ চুক্তির পূর্বেই হজযাত্রীর চূড়ান্ত সংখ্যা জানানোর বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও হজযাত্রী ও হজ এজেন্সির বিশেষ অনুরোধে সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আগামী ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ হতে ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হলো। এ সময়ের মধ্যে দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন অথবা প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করে চূড়ান্ত নিবন্ধন করা যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাথমিক নিবন্ধন করা হলে প্যাকেজের অবশিষ্ট মূল্য ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখের মধ্যে আবশ্যিকভাবে একই ব্যাংকে জমা দিয়ে চূড়ান্ত নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় এ বছর হজে যাওয়া যাবে না এবং প্রদত্ত অর্থ ফেরত দেওয়া হবে না।
দুই দফা সময় বাড়িয়েও এবার হজ নিবন্ধনে নির্ধারিত কোটার অর্ধেকও পূরণ হয়নি। নির্ধারিত কোটার প্রায় ৭৪ হাজার বাকি রেখেই নিবন্ধন বন্ধ ঘোষণা করে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। হাবের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল জানিয়েছিলেন, হজ নিবন্ধনের চূড়ান্ত সময় বাড়ানো নিয়ে সৌদি সরকারের সঙ্গে আলাপ করে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, ১৮ জানুয়ারি হজের চূড়ান্ত নিবন্ধনের সময় শেষ হয়েছে। সার্ভার জটিলতাসহ নানা কারণে এখনো প্রায় ৭৪ হাজার মুসল্লি নিবন্ধন করতে পারেনি। বাংলাদেশের মানুষ অলসতা করতে করতে এমন পর্যায়ে যায় যখন আর সময় থাকে না। ইতোমধ্যে আমরা সৌদি সরকারের সঙ্গে কথা বলেছি। যদি তারা সময় পরিবর্তনের জন্য সুযোগ দেয় আমরাও সময় বাড়ানোর জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
জানা যায়, সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক নিবন্ধন করেছে ৫৩ হাজার ১৭৩ জন। চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। সৌদি আরবের সঙ্গে হজ চুক্তি অনুযায়ী আসন ফাঁকা রয়েছে ৭৪ হাজার ২৫ জনের।
গত বছরের ১৫ নভেম্বর থেকে এবারের হজ নিবন্ধন শুরু হয় এবং সময়সীমা ছিল গত ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে হজ নিবন্ধনের সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধনের সময় বাড়ায় ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। কিন্তু তাতেও নিবন্ধনে কাঙ্ক্ষিত সাড়া মেলেনি।
হজের খরচ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় গত বছর নিবন্ধনে কাঙ্ক্ষিত সাড়া না মেলায় আটবার সময় বাড়ানো হয়। এরপরও শেষ পর্যন্ত পাঁচ হাজারের বেশি কোটা ফেরত যায়। এবার হজের খরচ কিছুটা কমানোর পরও নিবন্ধনে সাড়া মেলেনি। আরেক দফা সময় বাড়ালেও শেষ পর্যন্ত এবার কোনোভাবেই কোটা পূরণ হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।