কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৩ আগস্ট) সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের আশপাশের এলাকাসহ বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাসা-বাড়িতে অবস্থান করছে যা বর্তমানে পুলিশের নির্বিচারে ধরপাকড় ও নানারকম অনিরাপত্তার কারণে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যেহেতু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহায়তার কথা সম্প্রতি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে। তাই আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বলছি, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যেকোনো ভাবে সকল হল খুলে দেয়া হয়। অন্যথায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা আগামীকাল (রোববার) নিজ নিজ হলে নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে নিজেরাই উঠে যাবার ব্যবস্থা করবে। সে ক্ষেত্রে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়ী থাকবে।
এ বিষয়ে ফার্মেসি বিভাগের মাহমুদা তাহিরা বলেন, ‘প্রশাসন থেকে বলা হলো শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে হল বন্ধ করা হচ্ছে নিরাপত্তার স্বার্থে এবং সেটিও করা হলো রাত যখন সাড়ে আটটা। এত গুলো মেয়ে তখন যাবে কোথায়? অনেকেই পরিচিত বন্ধু-বান্ধবের মেসে আশ্রয় নিলো, যাদের বাড়ি কাছে তারা পরদিন চলে যেতে পারলো। কিন্তু মেসেও এখন রেহাই নেই, এলাকার ছাত্রলীগ বাড়িওয়ালাদের তাগাদা দিয়েই যাচ্ছে মেস খালি করে ফেলার জন্য। পুলিশও নাকি যেকোনো সময় রেইড দিবে। আমরা যদি সবাই বাড়িই যাবো, আমাদের যে ভাই-বোনেরা রাস্তায় জীবন হাতে নিয়ে নামছে তাদের জন্য থাকবে কে? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কি উচিত নয় এমন ক্রাইসিসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে বড় করে দেখা? হল খুলে দিয়ে এখনো এত কার্পণ্য কেন করছেন! আপনারা না দেখলে আমাদের সেইফটি এখন কে এনশিওর করবে?’
অ্যাকাউন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশনস বিভাগের হানিবুর রহমান রিফাত বলেন, রোববার দুপুর ১২টার মধ্যে হল যদি না খুলে দেয় তাহলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করব, প্রয়োজন হলে আমরা তালা ভেঙে প্রবেশ করব। গতকাল প্রক্টর অফিস থেকে যে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে ছাত্ররা গ্রেফতার হলে তারা ব্যবস্থা নিবে। তারা কী ব্যবস্থা নিবে? তারা আমাদেরকে হলের বিদ্যুৎ,গ্যাস বন্ধ করে দিয়ে হল থেকে বের করে দিয়েছে, আমরা আশেপাশের মেসে আবার কেউ আত্মীয়-স্বজনদের এখানে উঠেছি। এভাবে সবাই ছড়ায় ছিটিয়ে আছি, তাদেরকে আমরা কোথায় পাব, এ ধরনের বিজ্ঞপ্তি অর্থহীন। প্রক্টর যদি আগামীকাল হল খুলতে ব্যর্থ হন তাহলে আমরা হলের তালা খুলে ঢুকবো সাথে প্রক্টরের পদত্যাগ চেয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করবে।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, হলের বিষয়ে প্রক্টর কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এই বিষয় হল প্রভোস্ট সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এই বিষয়ে হল প্রভোস্টের সাথে কথা বলতে হবে। হল খোলার বিষয়টি আমি মাননীয় উপাচার্যকে অবহিত করবো। আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।