হলের আসন বরাদ্দের বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমানকে শাসানোর অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী ফাইজা মাহজাবিনের বিরুদ্ধে। তবে প্রভোস্টের বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ করেছেন ফাইজা।
শনিবার সন্ধ্যায় হলের প্রাধ্যক্ষর কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, শনিবার হল প্রশাসন কর্তৃক বরাদ্দকৃত এক শিক্ষার্থীর সিটে অন্য শিক্ষার্থীকে তুলেন ফাইজা। এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ তাঁর কাছে জানতে চাইলে উভয়ের মাঝে বাগবিতন্ডা ঘটে।
হল প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমানের অভিযোগ, হল প্রশাসন প্রেয়সী সানাকে ২১৬ নম্বর কক্ষের ওই সিটে বরাদ্দ দিয়েছে। সানা সিটে উঠতে গিয়ে ৩০৬ নম্বর কক্ষের আনজুমকে দেখে আমার কাছে অভিযোগ করলে আমি সিট পরিবর্তন করার বিষয়ে আনজুমের কাছে জানতে চাই। তখন ফাইজা এসে আমাকে বলে, ‘আমি হলের সভাপতি; আমি যাকে যেখানে সিট দেব, সে সেখানে থাকবে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ তুলে কাজী ফাইজা মাহজাবিন বলেন, স্যারের সাথে আমার বিতর্ক হয়েছে মাত্র। বেয়াদবি হওয়ার মতো কিছু হয়নি। বরং আমার ওপর ওনার পূর্ব ক্ষোভ থাকায় বিষয়টিকে অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে।
পূর্ব ক্ষোভের বিষয়ে ফাইজা বলেন, হল প্রভোস্ট প্রায়সময়ই বিনা অনুমতিতে আমার রুমে ঢুকে যান। মেয়েদের রুমে ঢুকে তাঁদের লকার চেক করেন। লকারে আমাদের ব্যাক্তিগত কাপড়ও থাকে। এ বিষয়ে উনাকে বেশ কয়েকবার বলায় তিনি আমার উপর ক্ষেপে আছেন। সেই পুরনো ক্ষোভের কারণেই বিষয়টিকে এখন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হচ্ছে।
২১৬ নাম্বার কক্ষের আরেক শিক্ষার্থী তৌফীকার সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রভোস্ট স্যার পূর্বে কোন কিছু না জানিয়ে এসে আমাদের ব্যাক্তিগত লকার চেক করতে চান। তখন আমরা না করতে পারি নাই। এমন ঘটনা অন্তত তিনবার ঘটেছে। কিন্তু একজন প্রভোস্ট মেয়েদের ব্যাক্তিগত লকার এভাবে দেখতে চাওয়া অনুচিত।
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমান বলেন, আমি কোনো রুমে ঢুকতে চাইলে আগে থেকেই জানিয়ে রাখি। বিভিন্ন রুমের নষ্ট লকার ঠিক করতে দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো ঠিক করা হয়েছে কি না- তা চেক করেছি।
এদিকে শিক্ষার্থী হয়ে আপনি অন্য কাউকে সিট দিতে পারেন কি না-এমন প্রশ্নে ফাইজা বলেন, ওই সিটটি প্রায় আট মাস খালি ছিল। এই ফ্লোরে সব সিনিয়ররা থাকায় আনজুমকেও এখানে আসতে বলি। প্রশাসন সেখানে অন্য কাউকে বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে আগে থেকে আমি কিছু জানতাম না। আমি স্যারের কাছে আনজুমকে সেখানে থাকতে দেওয়ার অনুরোধ করেছি মাত্র। আমার বিরুদ্ধে হলের ফি না দেওয়ারও অভিযোগ আনা হয়েছে, অথচ আমি ফি দিয়েই হলে থাকছি।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, তাকে (ফাইজা মেহজাবিন) দায়িত্ব দিয়েছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে সাধারণ মেয়েদের সমস্যা সমাধান করার জন্য। সে যদি ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে অন্যায় কিছু করে থাকে, আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। তবে ছাত্রলীগের হল ইউনিটের সভাপতি হিসেবে সে কোনো শিক্ষার্থীকে সিটে উঠাতেই পারে।