স্কুলের টিউবওয়েলের মাথা (মাটির ওপরের অংশ) নেই ৬-৭ মাস ধরে। চোর খুলে নিয়ে গেছে। এরপর আর লাগানো হয়নি। টিউবওয়েল না থাকায় সুপেয় পানির অভাবে দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ের দোতলায় পানির ব্যবস্থা রাখা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়, বাচ্চারাও দোতালায় গিয়ে পানি খেতে চায় না। ফলে তৃষ্ণা পেলে বিদ্যালয় গেইটের বাইরে চায়ের দোকানে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের। আবার অনেক ছাত্রী তৃষ্ণা চেপেই ক্লাস করেন। পানির না থাকায় তৃষ্ণার্ত থাকতে হয় অপেক্ষায় থাকা অভিভাবকদের। এমন চিত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের। দ্রুত টিউবওয়েল স্থাপনের দাবি ছাত্রছাত্রীদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলার রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বয়স শত বছরেরও বেশি। আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানের পাশাপাশি স্থানীয় ছেলে-মেয়েরাও এ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। উপজেলার একমাত্র সরকারি স্কুল এবং ফলাফল ভালো হওয়ায় এ স্কুলে পড়ার জন্য ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের আগ্রহ বেশি। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে এক হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রী রয়েছে।
স্থানীয়রা ও স্কুল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ৬-৭ মাস আগে টিউবওয়েলের ওপরের অংশটি কে বা কারা খুলে নিয়ে গেছে। এর পর আর মাথা লাগানো হয়নি। এজন্য পানি পানসহ অন্যান্য প্রয়োজনে পানি ব্যবহার করতে পারছে না ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা। পানি পানের জন্য বিদ্যালয়ের বাইরে চা-স্টল এবং মসজিদের টিউবওয়েল ব্যবহার করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু মেয়েরা বাইরে যেতে না পারায় পানির জন্য বেশি কষ্ট করছে। তবে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দোতলায় জগে পানি রাখা হয়। ছাত্রছাত্রীরা প্রয়োজনে পানি খেয়ে আসতে পারেন। তবে ছাত্রছাত্রীর তুলনায় তা পর্যাপ্ত নয়। অনেক সময় জগের পানি শেষ হয়ে গেলে ফিরে আসতে হয় শিক্ষার্থীদের।
এক নারী অভিভাবক বলেন, গরমের মধ্যে খুব পানি তৃষ্ণা পায়। কিন্তু স্কুলের টিউবওয়েল না থাকায় পানি খেতে পারি না। হঠাৎ একটা ছেলে মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে যে পানি দেয়ার কোনো ব্যবস্থাও নাই। একটা সরকারি স্কুলে এতোদিন যাবত টিউবওয়েল নষ্ট। এটা কি শিক্ষকদের নজরে পরে না। তিনি দ্রুত টিউবওয়েল মেরামতের জন্য দাবি জানান।
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. হিমেল খান বলেন, পানির অভাবে শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। কিডনি ফেইলিউরও হতে পারে। তাছাড়া এখন তীব্র গরমে প্রচুর ঘাম বের হচ্ছে। তাই এসময় প্রচুর বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত। শিশুরা সবসময় দৌড়াদৌড়ি করে। ওদের জন্য পানির প্রয়োজন বেশি।
জানতে চাইলে রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান খান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা ছেলেমেয়েদের বলেছি বাড়ি থেকে বোতলে করে পানি নিয়ে আসার জন্য। তাছাড়া দোতলায় জগে পানি রাখা থাকে। ছাত্রছাত্রীরা এসে পানি পান করে। টিউবওয়েলটি কয়েকবার মেরামত করা হয়েছে। আবারো করা হবে।