সব হামলা, গণ-সহিংসতা, ক্যাম্পাস ও পাহাড়ে গণ-হত্যার বিচার ও জনগণের নিরাপত্তার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা নিত্রার সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন বলেন, ফজলুল হক হলে যে লোকটিকে মেরে ফেলা হয়েছে তাকে শুধু আঘাত করেনি, তাকে তারা ভাত খাইয়েছে, ছবি তুলেছে, কথা বলেছে তারপর আবারও আঘাত করে একেবারে মেরে ফেলেছে। একজন মনোবিজ্ঞানী হিসেবে আমি যেটা বুঝেছি, এই কাজগুলো যারা করেছে তারা মানসিকভাবে চরম অসুস্থ। একজন মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিকে তারা তাদের বিবেক দিয়ে, মানবিকতা দিয়ে দেখেনি। তারা হত্যার নেশায় এই কাজটা করেছে। হয়তো তারা পরে বলবে, এই কাজটা তারা ইচ্ছেকৃত করেনি। কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় এটি ঘটেছে এটা তাদের বিকৃত মানসিকতারই প্রমাণ।
সামিনা লুৎফা বলেন, আমাদের এই প্রশ্নটাও তোলা উচিত, এই পরপর দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি মানুষকে হত্যা করা হলো। তারপরেই আমরা দেখলাম যে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শিক্ষার্থীদের সবধরনের রাজনীতিমুক্ত ঘোষণা করা হলো। এর পরিষ্কার ব্যাখাটা কী? যে রাজনীতি করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, আমরা ভাষা পেয়েছি, এই ২৪ এর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্বৈরশাসককে হটিয়েছে। এখানে কি রাজনীতি নেই? আপনি সেটাও যদি বন্ধ করে দেন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে হবেটা কি? খালি গান-বাজনা আর ফুল, লতা-পাতা?
অন্যন্য শিক্ষকেরা বলেন, দুইটা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বড় বড় ঘটনা ঘটে গেলো। অথচ প্রশাসন খুব শান্ত-স্থিরভাবে বলছে, আমরা তো বুঝতে পারিনি। এই যে প্রতিহিংসার রাজনীতি, আপনারা এই প্রতিহিংসাটা বাদ না দিয়ে রাজনীতিকে বাদ দিতে চান। আপনারা রাজনীতিকে নয় প্রতিহিংসাকে বাদ দেন। মনে রাখতে হবে, আপনাদের ক্ষমতা দেয়া হয়নি। আপনাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সেই দায়িত্বগুলো ঠিকভাবে পালন করুন।