ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে মন্তব্য করায় প্রবলভাবে সমালোচিত হয়েছিলেন বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ক্লোডিন গে। এরপর তার বিরুদ্ধে অন্যের লেখার অংশবিশেষ চুরির অভিযোগ উঠে।
এসব কারণে কয়েক সপ্তাহ ধরে পদত্যাগের ক্রমবর্ধমান চাপ সামলাতে হচ্ছিল ক্লোডিনকে। শেষ পর্যন্ত গতকাল মঙ্গলবার হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন তিনি।
এক বিবৃতিতে ক্লোডিন বলেন, ‘হৃদয়কে শক্ত করে ও হার্ভার্ডের প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রকাশ করে সবাইকে জানাতে চাই, আমি হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্টের পদ ছেড়ে দিচ্ছি।’
ক্লোডিন আরও বলেন, ‘জাতিগত বিদ্বেষের বিরুদ্ধে আমার মনোভাব ও বুদ্ধিবৃত্তিক কাজের যথাযথতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা বেশ কষ্টদায়ক ছিল। এ জন্য জাতিবিদ্বেষীদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত আক্রমণ ও হুমকি পেতে হয়েছে।’
গত বছরের জুলাইয়ে হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ক্লোডিন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ৩৮৭ বছরের ইতিহাসে তিনিই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট।
ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ বেড়ে যাওয়া নিয়ে গত মাসে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের শিক্ষাসংক্রান্ত কমিটিতে শুনানি হয়। এতে অংশ নেন ক্লোডিন। শুনানিতে আরও ছিলেন ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) ও ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার প্রেসিডেন্ট।
শুনানিতে নিউইয়র্কের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা এলিসে স্টেফানিক তাঁদের কাছে জানতে চান, শিক্ষার্থীরা তাঁদের ক্যাম্পাসে ‘ইহুদিদের গণহত্যার’ ডাক দিয়েছেন, এতে তাঁরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন কি না।
তিনজনের কেউই সরাসরি এ প্রশ্নের জবাব দেননি। শুনানিতে তাঁদের উত্তর ছিল দীর্ঘ, আইনজীবীসুলভ। অনেকটা এড়িয়ে যাওয়ার মতো। এতে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাঁদের।
এ শুনানির প্রতিক্রিয়ায় ৭০ আইনপ্রণেতা তাঁদের পদত্যাগ দাবি করেন। এমনকি হার্ভার্ডের প্রভাবশালী সাবেক শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে দাতারাও ক্লোডিনের অপসারণ চান। যদিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সাত শতাধিক শিক্ষক ক্লোডিনের সমর্থনে একটি চিঠি লিখেছেন।
এদিকে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে কংগ্রেসের শুনানিতে করা মন্তব্যের জেরে তীব্র সমালোচনার মুখে গত মাসে পদত্যাগ করেন ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার প্রেসিডেন্ট এলিজাবেথ ম্যাগিল।