আনন্দঘন শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিত করতে নির্বাচিত ১০ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ উন্নয়ন প্রকল্প (জুলাই ২০২৩ - জুন ২০২৬) গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
গত বৃহস্পতিবার (১ জুন) দুপুরে জাতীয় সংসদে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পেশ করার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, শিক্ষাকে কোমলমতি শিশুদের জন্য আনন্দঘন করার উদ্দেশ্যে আমরা সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিকক্ষ সজ্জিতকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছি। সে লক্ষ্যে নির্বাচিত ১০ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বিদ্যালয়ে মেয়েদের অবস্থান ও পড়াশোনার সুযোগ বৃদ্ধির জন্য পর্যায়ক্রমে সকল বিদ্যালয়ে ও শিক্ষিকাদের জন্য আলাদা টয়লেট নির্মাণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের সুবিধার্থে প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে র্যাম্প নির্মাণ করছি। মাঠ পর্যায়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের প্রতিবন্ধকতা উত্তরণ সহায়ক উপকরণ ক্রয় ও বিতরণের জন্য প্রতিটি উপজেলায় চাহিদার ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। আমরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী প্রদানের কাজ অব্যাহত রেখেছি।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় আরও উৎকর্ষ আনার জন্য শিক্ষা পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা বিকেন্দ্রীকরণ করা হচ্ছে এবং স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্ল্যান (স্লিপ) বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর আওতায় মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন স্তরে আর্থিক ক্ষমতা পুনর্বিন্যস্ত করা হয়েছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুসহ সমাজের সকল শিশুদের মূলধারার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া নিশ্চিতকল্পে একীভূত শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে ২৬ হাজার ৩৬৬ জন শিক্ষকের পদ সৃজন করা হয়েছে। নতুন সৃজিত পদসহ মোট ৩২ হাজার ৫৭৭টি পদে নিয়োগের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ৫টি কোর ও ৩টি নন-কোর বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট সংসদে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী যে বাজেট বক্তব্য দিচ্ছেন তার শিরোনাম দেওয়া হয়েছে- ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে।’
আগামী এক বছর দেশ পরিচালনার সার্বিক আয়-ব্যয়ের হিসাব রয়েছে এই বাজেটে। এটি আওয়ামী লীগ সরকারের ২৩ তম ও বাংলাদেশের ৫২ তম বাজেট। প্রস্তাবিত বাজেট ২৬ জুন অনুমোদন হবে আর ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হচ্ছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বিশাল এ বাজেটের ঘাটতি ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা; যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ।