১২৫ টাকায় ৯০টি ইলিশ। ভাবছেন সায়েস্তা খানের আমল। না, তা নয়। ১২৫ টাকায় আধা কেজি জাটকা বা ইলিশের পোনা কিনলেন এক ব্যক্তি। গুনে দেখা গেল ওই আধা কেজিতে ৯০টি ছোট ইলিশ মাছ পেয়েছেন তিনি। এই মাছগুলো তুলনামূলক বড়। তাই কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে। ওই বিক্রেতার কাছে এর চেয়ে আরো ছোট ছোট এক ঝুড়ি মাছ। সেগুলো ভাগ দিয়ে ২০-৩০ টাকা করে প্রতি ভাগ বিক্রি করছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের বটতলা বাজারের সরেজমিনে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে। এভাবেই প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে জাটকা বা ইলিশের পোনা বিক্রি হচ্ছে।
ইন্দুরকানীতে অবৈধ জালে ইলিশের পোনা নিধনের মহোৎসব চলছে। উপজেলার কচা ও বলেশ্বর নদের বিভিন্ন স্থানে দেড় শতাধিক বাদা জালে (বেহুন্দী জাল) ইলিশের পোনা ধরা হচ্ছে। আর উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে প্রতিদিন এসব পোনা ইলিশ প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে। এক শ্রেণীর অসাধু জেলেরা মাসের পর মাস এভাবে ছোট ইলিশ, পোমা ও তাপসী মাছের পোনা ধরছে। কেউ আবার নদীর বিভিন্ন চরে নেটের টানা জাল বেয়ে ভাটা ফাইস্যার পোনা ধরার সময় বিভিন্ন রকমের মাছের ডিম ও রেনু নষ্ট করছেন।
সরজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার কচা নদীর লাহুরী, টেংরাখালী, কালাইয়া, চন্ডিপুর, খোলপটুয়া এবং বলেশ্বর নদের উত্তর কলারণ সংলগ্ন নদীতে সারি সানি বাদা জাল পেতে জেলেরা মাছ ধরছে। সবচেয়ে বেশি পোনা ইলিশ ধরা হচ্ছে চন্ডিপুর ইউনিয়নের বাশগাড়ি এবং সন্যাসী ফেরীঘাটের উত্তরে ছৈলার চর সংলগ্ন নদীতে।
মূলত চিংড়ি মাছ ধরার জন্য এ জাল পাতা হলেও স্রোতের টানে বিশালাকার প্রতিটি জালে লাখ লাখ পোমা, তাপসী ও ইলিশের পোনা ধরা পড়ে। জেলেরা প্রতি ঝুড়ি মাছ (সংখ্যায় কয়েক লাখ) পাইকারদের কাছে ৮০০ থেকে হাজার টাকায় বিক্রি করে। পাইকাররা ঝুড়ি ভর্তি মাছ বিভিন্ন হাট বাজারে নিয়ে প্রকাশ্যে ২০-৩০ টাকা করে ভাগ দিয়ে বিক্রি করে। প্রতি ভাগে ২-৩শ’ ইলিশের পোনাসহ অনেকগুলো পোমা ও তাপস্যীর বাচ্চা থাকে। এমনকি উপজেলা সদরের ইন্দুরকানী বাজারেও প্রকাশ্যে এ মাছ বিক্রি হয়। বৃহস্পতিবার উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের বটতলা, বালিপাড়া, চন্ডিপুর ও বলেশ্বর বাজারে ইলিশের পোনা বিক্রি করতে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, উপজেলা মৎস্য দপ্তর থেকে মাঝে মাঝে স্থানীয় নদ নদীতে অভিযান পরিচালনা করা হলেও জেলেরা আগেই অভিযানের খবর পেয়ে যাওয়ায় অনেক অভিযান সফল হয় না।
ইন্দুরকানী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জুলফিকার আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি বুধবারও অভিযান পরিচালনা করেছি। ২টি বাধা জাল ধরতে পেরেছি। সন্যাসী সংলগ্ন নদীতে আরো প্রায় ৪০টি জাল পাতা ছিলো। জেলেরা আমাদের দেখে পালিয়েছে। একই নদীর ভান্ডারিয়া অংশেও অনেক জাল পাতে। সে অংশতো আমদের ভেতরে না।
ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন্নেছা খানমকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি বিষয়টি দেখছি। আগামী দিন ফিসারিজ অফিসারকে পাঠাবো।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।