ঝালকাঠির রাজাপুরের চরকেওতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চার কর্মচারী পদে নিয়োগে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ২০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে ঘুষ দেয়া প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়ার পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ চাকরি প্রত্যাশীদের। তারা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে বিষয়টি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে, টাকা নেয়ার অভিযোগ মিথ্যা বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মাসুদ আলম।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, একজন অফিস সহায়ক, একজন নিরাপত্তকর্মী, একজন আয়া ও একজন পরিচ্ছতাকর্মী নিয়োগে গত ১৪ মে পত্রিকায় বিজ্ঞাপ্তি দেয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে আগ্রহীদের বিদ্যালয়ের ঠিকানায় আবেদন করতে বলা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চার পদেই আবেদন পরেছে। তবে চার পদে কতটি আবেদন এসেছে সে তথ্য নিশ্চিত করে বলতে পারেনি সূত্র।
স্থানীয় বারেক মাস্টার, মনিরউজ্জামান ও ইয়াকুব আলী খান অভিযোগ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, চরকেওতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চারটি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়ার কথা ছিলো। বিজ্ঞপ্তি দেয়ার আগেই অনেকে জায়গা-জমি, গাছ-পালা বিক্রি করে সভাপতিকে ঘুষের টাকা দিয়েছেন। সভাপতি তার চাহিদার চেয়ে বেশি টাকা পেয়ে অনেকের টাকা ফেরত দিয়েছেন। যেই চারজনকে নিয়োগ দেয়ার জন্য চূড়ান্ত করেছেন তাদের কাছ থেকে মোট বিশ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা গ্রহণ করে নিয়োগ দেয়ার পায়তারা করছে। স্থানীয় কাউকে না জানাতে নিয়োগ গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি না পেয়ে সভাপতির মনোনীত চারজন বাদে স্থানীয় আর কেউ আবেদন করতে পারেননি। তারা ফুঁসে উঠেছে। এমনকি ওই বিজ্ঞপ্তি বিদ্যালয়ের, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা শিক্ষা অফিসের নোটিশ বোর্ডেও টাঙানো হয়নি। এমনটি বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছাড়া অন্য কোনো সদস্য এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিষয় কিছুই জানেন না। অথচ তাদের বাড়ি বাড়ি রেজুলেশন খাতা পাঠিয়ে আগেই স্বাক্ষর নিয়ে নিয়েছেন সভাপতি মাসুদ আলম।
নিয়োগ প্রত্যাশী মোর্শেদার স্বামী মো. সোলায়মান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগেই নানা-বাড়ির জায়গা-গাছ বিক্রয় করে আয়া পদের জন্য সভাপতিকে টাকা দিয়েছিলাম। পরে অন্যের কাছ থেকে বেশি টাকা গ্রহণ করে সভাপতি আমার টাকা ফেরত দিয়ে দেয়। এখন কিছু টাকা সভাপতির প্যানেলের লোকের কাছে রয়ে গেছে।
বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য পারভিন সুলতানা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, নিয়োগের বিষয় আমি কিছুই জানি না। পিয়ন বাড়ি পাঠিয়ে বিল পাস ও উপস্থিতির কথা বলে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মাসুদ আলম জানান, নিয়োগ কার্যক্রম চলছে। যদি কোনো সমস্যা হয় তবে এই নিয়োগ বাতিল করে পুনঃনিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। টাকা-পয়সা লেনদেনের অভিযোগ মিথ্যা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তাফা কামাল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিনে তদন্ত করে সত্যতা পেলে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হবে।