আগামীকাল রোববার (২২ জানুয়ারি) থেকে দেশের ৪৪টি জেলা ও আটটি সিটি কর্পোরেশনের স্কুলে-স্কুলে ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিক্ষার্থী, পথশিশু ও ঝরে পড়া শিশুদের কৃমিনাশক সেবন শুরু হবে। ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। ২২ থেকে ৩১ জানুয়ারি এসব জেলা ও সিটি কর্পোরেশনে ২৭ তম জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ পালন করা হবে। কিন্তু ওষুধের শিপমেন্ট না আসায় বাকি ২০ জেলা ও ৩ সিটি কর্পোরেশনের কৃমিনাশক সপ্তাহ পালন শুরু হচ্ছে না।
জানা গেছে, ৪৪টি জেলা ও ৮টি সিটি করপোরেশনের প্রাথমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সী সব শিশুকে এক ডোজ কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানো হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, পর্যাপ্ত পরিমাণে কৃমিনাশক ওষুধ না থাকায় দেশের সব জেলার শিশুকে ওষুধ খাওয়ানো সম্ভব হচ্ছে না। বিদেশ থেকে ওষুধ দেশে পৌঁছালে মার্চে বাকি ২০টি জেলা ও ৩টি সিটি করপোরেশনের শিশুদের কৃমির ওষুধ খাওয়ানো হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এবং ফাইলেরিয়াসিস নির্মূল, কৃমি নিয়ন্ত্রণ ও খুদে চিকিৎসক কার্যক্রম এবং কালাজ্বর নির্মূল কর্মসূচির ব্যবস্থাপক এম এম আক্তারুজ্জামান জানান, ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের পরীক্ষায় দেশের ৮০ শতাংশ শিশুর মলে কৃমির উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিলো। ওই বছর দেশে কৃমি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু হয়। প্রথমে তিনটি জেলায় এবং পর্যায়ক্রমে সারা দেশে তা বাস্তবায়ন করা হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ পালন করা হচ্ছে। বর্তমানে ৮ শতাংশের কম শিশুর কৃমির সমস্যা আছে।
জানা গেছে, সারা দেশের প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (সরকারি-বেসরকারি, ফরমাল, নন-ফরমাল স্কুল, মাদরাসা, মক্তব) এবং প্রায় ৩৩ হাজার মাধ্যমিক পর্যায়ের (বিদ্যালয় ও মাদরাসা) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ কর্মসূচির আওতাভুক্ত। ২২ থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ শিশুকে কৃমির ওষুধ খাওয়ানো হবে। শিশুদের ভরা পেটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো বা সঙ্গে আনার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, ৭ থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত ফাইলেরিয়াসিস নির্মুল কর্মসূচি ও কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের অধীনে ২৭তম কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ পালন ও স্কুলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের কৃমিনাশক সেবন করানোর কথা ছিলো। কিন্তু শিপমেন্ট দেরি হওয়ায় ২০ জেলা ও ৩টি সিটি কর্পোরেশনের কৃমিনাশক ওষুধ পাঠাতে পারেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এদিকে স্কুলে স্কুলে ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুদের কৃমিনাশক সেবন ও কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ পালনে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষকদের বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসাররা প্রধান শিক্ষকদের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ২৭ তম জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য নির্দেশনা দেবেন। সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসাররা নিজ নিজ ক্লাস্টারের বিদ্যালয়গুলোতে জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমটি সুষ্ঠুভাবে প্রতিপালনের বিষয়টি নিবিড়ভাবে তত্ত্বাবধান করবেন। জেলা ও উপজেলার সব কর্মকর্তাকে দৈব চয়নের ভিত্তিতে বিদ্যালয়গুলোতে এ কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পরিবীক্ষণ করতে হবে। শিক্ষকরা যেনো স্বতঃস্ফূর্তভাবে উভয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বিদ্যালয়ের সব সহকারী শিক্ষকদের এ কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করতে হবে।নিদের্শনায় আরও বলা হয়েছে, সব মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং পথশিশু, কর্মজীবী শিশু, প্রতিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এলাকার ঝরে পড়া ১২- ১৬ বছর বয়সি শিশুদের বিদ্যালয়ে এনে কৃমিনাশক ট্যাবলেট সেবন করাতে হবে। প্রধান শিক্ষকরা কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পালনের আগের দিন দৈনিক সমাবেশে সব শিক্ষার্থীকে ওষধ সেবন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেবেন। খালি পেটে কৃমিনাশক ট্যাবলেট সেবন করানো যাবে না। অসুস্থ শিশুদের ঔষধ সেবন থেকে বিরত রাখতে হবে। শিশুদের কৃমিনাশক ট্যাবলেট সেবন তথ্য স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সরবরাহ করতে হবে এবং এ বিষয় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।