৪ বছর ধরে লাপাত্তা শিক্ষিকা, তুলেছেন বেতন-ভাতা - দৈনিকশিক্ষা

৪ বছর ধরে লাপাত্তা শিক্ষিকা, তুলেছেন বেতন-ভাতা

বেরোবি প্রতিনিধি |

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রভাষক মাশরেকি মুস্তারির বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরি পাওয়ার পর থেকেই বিধিবহির্ভূতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ উঠেছে। কোনপ্রকার ছুটি ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন অন্তত ৪ বছর। দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার ব্যাপারে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হলেও তার যথাযথ জবাব মেলেনি। পরে বিষয়টি অনুসন্ধানে একটি কমিটি গঠন করে দেয় বেরোবি প্রশাসন। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১২ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে যোগদান করেন মাশরেকি মুস্তারি। ক্যাম্পাসে না এসেই তৎকালীন উপাচার্যের ‘হাওয়া ভবন খ্যাত লিয়াজুঁ অফিসেই’ যোগদান করেন তিনি। যোগদানের পর থেকেই বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের নামে প্রায় একবছর ঢাকাতে অবস্থান করেন ওই শিক্ষক। তীব্র শিক্ষক সংকটে লোকপ্রশাসন বিভাগে সেশনজট প্রকোপ আকার ধারন করলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে বিভাগে এসে ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থীদের দুই-তিনটি ক্লাস নিয়ে লাপাত্ত হন এই শিক্ষক।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১০ নভেম্বর থেকে এই শিক্ষক বিভাগের কোনো ব্যাচের শিক্ষার্থীদের কোর্স নেননি এবং বিভাগের কোনো সভায়ও তিনি ভার্চুয়াল অথবা স্বশরীরে উপস্থিত হননি। কোনরকম শিক্ষাছুটি ছাড়াই বিধিবহির্ভূতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন চার বছরের বেশি সময়। এছাড়াও কর্মস্থলে উপস্থিত না থেকেই যোদদানের পর প্রায় দুই বছর নিয়মিত বেতন-ভাতা নিয়েছেন তিনি। পরে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাস থেকে লোকপ্রশাসন বিভাগের এই প্রভাষকের বেতন ভাতা বন্ধ রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

সূত্র জানায়, দেশের বাইরে বিভিন্ন সভা সেমিনারের নামে কয়েক দফায় ৮৯ দিনের ছুটি গ্রহণ করেন মাশরেকি মুস্তারি। এরপর প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই বছরের পর বছর অবস্থান করছেন দেশের বাইরে। জাপানে পিএইচডি করলেও কোন প্রকার শিক্ষা ছুটির জন্য কখনো আবেদন করেননি তিনি।

এদিকে দীর্ঘদিন বিধিবহির্ভূতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার কারণ জানতে চেয়ে সেই শিক্ষককে নোটিশ দেয় প্রশাসন। পরে এর জবাবও দেন তিনি। নোটিশের জবাব যথাযথ না হওয়ায় একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। চার বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত এই শিক্ষক বর্তমানে কি করছেন, কোথায় আছেন সেটা বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেউই অবগত নন।

বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের বিভাগে এমনিতে শিক্ষার্থী অনুপাত শিক্ষক কম রয়েছেন। এর মধ্যে যদি কোন শিক্ষক অনুপস্থিত থাকেন তাহলে আমদের কোর্সগুলে শেষ করতে বাকি শিক্ষকদের হিমসিম খেতে হয়।

সার্বিক বিষয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগের বর্তমান বিভাগীয় প্রধান আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পরও তাকে বেশ কয়েকবার বলেছি যে, শিক্ষক সংকট আছে আপনি চলে আসেন। উনি তারপরও আসেন নি। পরে বিভাগ থেকে মতামত চায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমরা মতামত দিয়েছি যে, উনি ২০১৯ সাল থেকে বিভাগে অনুপস্থিত, এই ব্যাপারটা দ্রুত সুরাহা করা দরকার।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মোরশেদ উল আলম বলেন, প্রথমত এটি একটি প্রশাসনিক বিষয়। এই বিষয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে এখন পর্যন্ত আমাকে কিছু জানানো হয়নি। আমি নতুন ডিন হয়েছি, ইতিপূর্বে যিনি এই দায়িত্বে ছিলেন তাকে হয়তোবা এই বিষয়টা জানানো হয়েছে। সেটা আমি সঠিক জানিনা। লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে যদি এ বিষয়ে আমাকে জানানো হয় পরবর্তীতে আমি সেটা প্রশাসনকে জানাতে পারবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আলমগীর চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি এখনও প্রক্রিয়াধীন আছে। যেহেতু এটা একটি নিয়মতান্ত্রিক বিষয়। সেহেতু আমাদেরকে কমিটি গঠন ও কমিটির রিপোর্টের আলোকে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ বলেন, বিষয়টি আমি অবগত। ইতিমধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে দুই শব্দে অধ্যক্ষের পদত্যাগ! - dainik shiksha দুই শব্দে অধ্যক্ষের পদত্যাগ! বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে পাকিস্তান - dainik shiksha বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে পাকিস্তান বিএনপি নির্বাচিত হলে গুম প্রতিরোধে আইন করব: তারেক - dainik shiksha বিএনপি নির্বাচিত হলে গুম প্রতিরোধে আইন করব: তারেক ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইসহাক আলীর মৃত্যু শ্বাসরোধে: মেঘালয় পুলিশ - dainik shiksha ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইসহাক আলীর মৃত্যু শ্বাসরোধে: মেঘালয় পুলিশ ঢাবিতে যোগ দিলেন চাকরিচ্যুত অধ্যাপক ড. সাইফুল - dainik shiksha ঢাবিতে যোগ দিলেন চাকরিচ্যুত অধ্যাপক ড. সাইফুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033140182495117