দৈনিকশিক্ষাডটকম ডেস্ক : আজ ১২ জানুয়ারি (শুক্রবার) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ চত্বরে সকাল দশটায় প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ নূরুল আলম জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন, বেলুন এবং পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী ভাষণে উপস্থিত সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে উপাচার্য বলেন, প্রতিষ্ঠার ৫৩ বছরের অগ্রযাত্রায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দেশে-বিদেশে শিক্ষা-গবেষণা, শিল্প-সাহিত্য, রাজনীতি এবং ক্রীড়াঙ্গনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছেন। বিশ্বের টু পার্সেন্ট সেরা বিজ্ঞানীর তালিকায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা স্থান লাভ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্মানিত করেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক টাইমস হায়ার এডুকেশন ম্যাগাজিনের শিক্ষা ও গবেষণার ওপর ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং তালিকায় এ বিশ্ববিদ্যালয় স্থান লাভ করেছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সম্মান ও গৌরবের।
তিনি আরো বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণ এবং সহযোগিতায় বিশ্ব র্যাংকিংয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান আরো সুদৃঢ় হবে।
উপাচার্য তাঁর ভাষণে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন প্রচলনের জন্য তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল বায়েসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। উপাচার্য আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশ থেকে আসা বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীর অংশগ্রহণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি তাঁদের গভীর অনুরাগের বহিঃপ্রকাশ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্যের সঙ্গে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, প্রক্টর উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রেজিস্ট্রার মো. আবু হাসান। পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। আনন্দ শোভাযাত্রায় উপ-উপাচার্য প্রশাসন, উপ-উপাচার্য শিক্ষা, কোষাধ্যক্ষ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, হল প্রভোস্ট এবং বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
আনন্দ শোভাযাত্রাটি সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে দিনব্যাপী রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে স্মৃতিচারণ, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ও হ্যান্ডবল ম্যাচ, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র এবং শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে জহির রায়হান মিলনায়তনে চারুকলা বিভাগের আয়োজনে চিত্র প্রদর্শনী এবং কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া চত্বরে পিঠা মেলার আয়োজন করা হয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৭০-১৯৭১ শিক্ষাবর্ষে ৪ জানুয়ারি অর্থনীতি, ভূগোল, গণিত ও পরিসংখ্যান এই চারটি বিভাগে ভর্তি করা (প্রথম ব্যাচে) ১৫০ জন ছাত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হলেও ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জানুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আহসান এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শুভ উদ্বোধন করেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজেক্ট ডিরেক্টর ছিলেন ড. সুরত আলী। বিশিষ্ট রসায়নবিদ অধ্যাপক ড. মফিজ উদ্দিন আহমদ প্রথম উপাচার্য হিসেবে এ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।