বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি পালনের পরের দিন দেশের উচ্চ আদালতে ‘আগুন সন্ত্রাস’ প্রসঙ্গ উঠেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বলেছেন, আগুন সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ হাইকোর্টে আনবেন না। এটি ১৮ কোটি মানুষের কোর্ট।
মোসাদের সঙ্গে বৈঠক করাসহ নানান অভিযোগে গ্রেফতার বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর জামিন ও হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের বিষয়ে শুনানির ধার্য দিনে রোববার (৩০ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ প্রসঙ্গ উঠে আসে।
আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট কেন দিতে পারছেন না তদন্তকারী পুলিশ, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। তদন্ত কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে আদালত বলেন, রিপোর্ট দিতে পারছেন না কেন? এত দেরি কেন হচ্ছে?
এসময় পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মাই লর্ড একটু সময় লাগবে। এখানে অনেক আসামি। পরে আদালত তদন্ত কর্মকর্তার কাছে নির্দিষ্ট সময় জানতে চান।
এসময় রাষ্ট্রপক্ষের সিনিয়র আইনজীবী অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর বলেন, এই আসামি মোসাদকাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন। আদালত বলেন, ইসরায়েল আর আমেরিকা গেছে, সেটি আমরা দেখবো না।
এসময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসেন বাপ্পী আদালতকে জানান, গতকাল শনিবার (২৯ জুলাই) আবার রাজপথে আগুন সন্ত্রাস শুরু হয়েছে।
তখন হাইকোর্ট বলেন, মিস্টার ডিএজি আগুন সন্ত্রাস প্রসঙ্গ হাইকোর্টে আনবেন না। এটি ১৮ কোটি মানুষের কোর্ট। কোর্টের পরিবেশ নষ্ট করছেন কেন? পরে হাইকোর্ট আসলাম চৌধুরীর জামিন শুনানি ২ মাসের জন্য স্ট্যান্ডওভার রাখে।
এছাড়াও হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে শাহবাগ থানায় দায়ের হওয়া মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুই মাস সময় দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে এ মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর জামিন শুনানি দুই মাস মুলতবি করা হয়েছে।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ শাহীন মীরধা। অন্যদিকে ছিলেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
নানির শুরুতে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর আদালতকে বলেন, এ মামলায় অনেক আসামি আছেন, তাদের তথ্য সংগ্রহের জন্য সময় প্রয়োজন। এ মামলার আসামি আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্টের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার উৎখাতের অভিযোগ রয়েছে।
তখন হাইকোর্ট বলেন, সে আমেরিকা গেছে নাকি ইসরায়েল গেছে, সেটি আমরা দেখবো না। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এর আগে ব্যবসার কথা বলে দেশে এসে পরে দেশ দখল করেছিল। এখনো অনেকে আসছেন।
এসময় আদালত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারুনুর রশিদকে ডায়াসের সামনে ডেকে জানতে চান, তদন্ত শেষ করতে এত সময় নিচ্ছেন কেন? এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে পারবেন না? তখন তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, দুই মাস সময় প্রয়োজন। সারওয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, এরা (বিএনপি) আবার আগুন সন্ত্রাস শুরু করেছে।
তখন হাইকোর্ট ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ করে বলেন, আগুন সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ কোর্টে আনবেন না। এসব কোর্টের বাইরের বিষয়। এভাবে কোর্টের পরিবেশ নষ্ট করবেন না। কোর্ট ১৮ কোটি মানুষের। পরে আদালত এ মামলায় পুলিশের প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুই মাস সময় দেন।