গোলবারের নিচে আর্জেন্টিনার অতন্দ্র প্রহরী এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। আর্জেন্টিনার গোলবারে দাঁড়ালে তাকে মনে হয় গম্ভীর এক মানুষ। কখনো কখনো ধ্যানীও মনে হতে পারে তাকে। এই মার্তিনেজই মাঠের বাইরে আবার খুব মজার মানুষ। কখনো কখনো তিনি হয়ে ওঠেন দুরন্ত বালকের মতো। ড্রেসিংরুম মাতিয়ে রাখায় তার জুড়ি মেলা ভার!
গতকাল আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয়ের পর পুরস্কারমঞ্চে সেরা গোলকিপারের ট্রফি হাতে নেয়ার পর সেই দুরন্তপনার কিছুটা দেখিয়েছেন। তবে সবচেয়ে মজা করেছেন ড্রেসিংরুমের উদ্যাপনে। ড্রেসিংরুম কাঁপিয়ে নাচে-গানে শিরোপা-জয় উদ্যাপন করছিলেন আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়েরা।
সেই উদ্যাপন হঠাৎ করেই থামিয়ে দেন মার্তিনেজ।
কিছুক্ষণের জন্য উদ্যাপন থামিয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। এরপর ফাইনালে দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক করা ফ্রান্সের তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পেকে দেন এক খোঁচা। সতীর্থদের দিকে তাকিয়ে তিনি বলে ওঠেন, ‘এক মিনিটের নীরবতা।’ এটুকু বলে মার্তিনেজ ক্ষণিকের জন্য থামেন। এরপর গানের সুরে বলেন, ‘এমবাপ্পের জন্য, যে মরে গেছে!’
লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে গতকালের ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে বেশ ভুগিয়েছেন এমবাপ্পে। ফ্রান্সের বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে লিওনেল মেসির ২৩ মিনিটের গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ৩৬ মিনিটে আনহেল দি মারিয়া ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।
সবাই যখন ভাবছিলেন, ফাইনালটাকে একপেশে বানিয়ে শিরোপা জিততে যাচ্ছে আর্জেন্টিনা, তখন জেগে ওঠেন এমবাপ্পে। ৯৭ সেকেন্ডের মধ্যে জোড়া গোল করে ফ্রান্সকে ম্যাচে ফেরান তিনি।
ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও নাটক। ১০৮ মিনিটে মেসি নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে এগিয়ে দেন আর্জেন্টিনাকে। আবার এমবাপ্পে এগিয়ে আসেন ফ্রান্সের ত্রাতা হয়ে। ১১৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচ নিয়ে যান টাইব্রেকারে। সেখানেও প্রথম শট থেকেই গোল পান এমবাপ্পে। তবে কিংসলি কোমানের শট ফিরিয়ে দেন মার্তিনেজ। এরপর অরিলিয়ে চুয়ামেনি বাইরে মারেন। আর্জেন্টিনা টাইব্রেকার জিতে যায় ৪-২ ব্যবধানে।
সব মিলিয়ে এমবাপ্পের হ্যাটট্রিকের কারণেই শিরোপা জয়ের আগে এতটা ভুগতে হয়েছে আর্জেন্টিনাকে। এ কারণেই হয়তো ফরাসি স্ট্রাইকারকে অমন খোঁচা দিয়েছেন মার্তিনেজ।