ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক ড. ওয়াহিদুজ্জামান চাঁনের বিরুদ্ধে হিজাব পরা ছাত্রীদের হেনস্তা ও অপদস্ত করার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন কিছু ছাত্রী। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যাপক চাঁন বলেছেন, রাজনৈতিক কারণে একমাস আগের ঘটনাকে পুঁজি করে একটি তৃতীয় মহল শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে আন্দোলনে নামিয়েছে।
বুধবার রাতে দৈনিক আমাদের বার্তার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের তৃতীয় বর্ষের ভাইভা অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ৩১ জুলাই। তার এক মাস পর শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে আন্দোলনে নামানো হয়েছে। ওই দিন এক ছাত্রী মুখ ডেকে ভাইভা দিতে আসেন। ভাইভায় অংশ নেয়ার কিছু নিয়ম আছে, ড্রেস কোড আছে। ভাইভায় ফর্মাল পোশাকে অংশ নিতে হয়। কিন্তু এক ছাত্রীর মুখ ঢাকা ছিলো। তার পরিচয় শনাক্ত হতেই তাকে মুখের কাপড় সরাতে বলেছি। ওই ছাত্রী আমার মেয়ের মতো। তাকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করে, অন্য ঘরে যেয়ে নেকাব খুলে আসতে বলা হয়েছিলো। তিনি ভাইভা বোর্ডের সামনেই নিকাব খোলার অনুমতি চান। পরে মুখ খুলে ভাইভায় অংশ নেন। ওই ছাত্রী অভিযোগ তুলেছেন বলে আমি বিশ্বাস করি না।
অধ্যাপক চাঁন বলেন, মুখ ঢেকে রাখা কি পর্দার অংশ? আমাদের মা বোনরাও তো পর্দা করেন। আমরা কি জানি না। আমি হজ করে এসেছি। আমার মতো একজন হাজীকে নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে। তারা ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক নিয়ে ঘৃণ্য তথ্য ছড়াচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীরা যেকোনো পোশাকে ক্লাসে অংশ নিতে পারলেও ভাইভায় অংশ নেয়ার একটি বিধান আছে। কোনো ছাত্র যদি টিশার্ট পরে ভাইভা দিতে চায় তাকে কি ভাইভা দিতে দেয়া যায়? যাকে মুখ খুলতে বলা হয়েছে তিনি কোনো প্রতিবাদ করেননি। কোনো তৃতীয় মহল ওই দিনের ঘটনা পুঁজি করে অপপ্রচার করছে। তাদের বিচার হওয়া উচিত।
এদিকে বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন কিছু ছাত্রী। তাদের অভিযোগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) নিকাব ও হিজাব পরিধান করা শিক্ষার্থীদের নিকাব খুলে ভাইভায় অংশ নিতে বাধ্য করেন অধ্যাপক ড. ওয়াহিদুজ্জামান চাঁন। একজন শিক্ষার্থীকে ভাইভা দিতে দেয়া হয়নি। এছাড়া জোরপূর্বক কিছু শিক্ষার্থীর হিজাব খুলে মুখ ও কান দেখে ভাইভা নেয়া হয়।
সমাবেশ শেষে ছাত্রীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন। উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়ে তারা কর্মসূচি শেষ করেন।