কওমি মাদরাসাকে মূলধারায় আনার কথা হতাশাজনক ও উস্কানিমূলক বলে মন্তব্য করেছেন অরাজনৈতিক সংগঠন কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী পীর সাহেব দেওনা। ‘কওমি মাদরাসাকে মূলধারার শিক্ষায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে’, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির দেওয়া এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে এই মন্তব্য করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আমরা শিক্ষামন্ত্রীকে স্পষ্টভাবে মনে করিয়ে দিতে চাই, তার এই বক্তব্য আইনবিরোধী। কারণ, ‘আল হাইয়াতুল উলইয়া লিলজামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’-এর অধীনে ‘কওমি মাদরাসাসমূহের দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল)-এর সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি)-এর সমমান প্রদান আইন, ২০১৮’ (২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৪৮ নং আইন)-এ স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘কওমি মাদরাসাগুলো স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও স্বকীয়তা বজায় রেখে দারুল উলূম দেওবন্দের মূলনীতিসমূহকে ভিত্তি ধরে পরিচালিত হবে। মাদরাসা পরিচালনা ইত্যাদিতে প্রভাবমুক্ত থেকে স্বকীয় বৈশিষ্ট্য বজায় রাখবে।’
আরো পড়ুন :
কওমি শিক্ষার্থীদের মূল ধারায় নিয়ে আসার তাগিদ
কওমি মাদরাসাকে মূলধারায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে : শিক্ষামন্ত্রী
সংসদে পাস হওয়া সিদ্ধান্ত ও আইন নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর এমন বক্তব্য হতাশাজনক উল্লেখ করে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘কওমি মাদরাসাশিক্ষাকে নিয়ে মন্ত্রীর এমন মন্তব্য প্রমাণ করে কওমি মাদরাসা ও কওমি শিক্ষার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। তার এ বক্তব্যের পর সারাদেশে নিন্দার ঝড় শুরু হয়েছে।’
তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী কওমি মাদরাসা সম্পর্কে উদ্ভট ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা মনে করি, সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই কওমি মাদরাসার বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’
দেওনার পীর আরও বলেন, বাংলাদেশ শতকরা ৯২ভাগ মুসলমানের দেশ। দ্বীনি শিক্ষা আমাদের ধর্মীয় অধিকার। ধর্মীয় শিক্ষায় কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ ধর্মপ্রাণ মুসলমান মেনে নেবে না।
বিবৃতিতে তিনি ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদও জানান। তিনি বলেন, ইসরায়েলের আগ্রাসনের শিকার নিরীহ ফিলিস্তিনি মুসলমানরা। নারী শিশু,
বৃদ্ধসহ সবাইকে নির্বিচারে হত্যা করছে জালেম এই সম্প্রদায়। তাদের রুখতে হলে ইসলামকে সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।এ সময় তিনি যুদ্ধে শহিদ মুসলিমদের রূহের মাগফিরাত ও চিকিৎসাধীনদের সুস্থতা কামনা করে বলেন, ফিলিস্তিনি মুসলিমদের এ ক্রান্তিকালে ওআইসিকে ভিন্ন ধারার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেই সঙ্গে যেভাবে ইসরায়েলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে সমর্থন না করে বাংলাদেশ ফিলিস্তিনিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছে ঠিক তেমনি তাদের এ ক্রান্তিকালে যথাসম্ভব পাসে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে মানবিক সাহায্য, জরুরি ওষুধপত্র ও খাদ্য সামগ্রী পাঠানোর জন্য সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
দেশের আপামর ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতি ফিলিস্তিনি মজলুম মুসলমানদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।