জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেছেন, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ পাকিস্তানিরা যে গণহত্যা করেছিলো তা ইতিহাসের জঘন্যতম কাজ। জঘন্যতম এ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এখনো আমরা পাই নি। আমরা দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই-এই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে হবে। একই সঙ্গে এই গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। এটা সময়ের দাবি।
রোববার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২ তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর আরো বলেন, ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ কি সুন্দর একটা নাম। অথচ এই সুন্দর নামের আড়ালে ইতিহাসের জঘন্যতম কাজ পাকিস্তানিরা করেছিলো। তারা অপারেশন সার্চ লাইট নাম দিয়ে নিরীহ বাঙালিদের গুলি করে হত্যা করেছিলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি হলে, রাজারবাগ পুলিশ লাইন ঘুমন্ত মানুষের ওপর তারা নির্বিচারে গুলি করে শত শত বাঙালিকে হত্যা করা শুরু করে দেয়। একাত্তরের ২৫ মার্চের রাত ইতিহাসে কাল রাত হিসেবে চিহ্নিত।
তিনি বলেন, গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ব্যাপারে বাঙালিদের সমন্বিতভাবে সমস্বরে দাবি উত্থাপনের সময় এসেছে। এ দাবি উত্থাপনের মধ্যদিয়ে মূলত ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগকে আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারি। একাত্তরে যেসব মুক্তিযোদ্ধা বাংলাদেশের জন্য জীবন দিয়েছেন এখনো যারা জীবিত আছেন তাঁদেরকে শ্রদ্ধা জানাতে হবে। এছাড়া স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী যে শক্তি, তারা যে নামেই থাকুক না কেনো তাদের প্রতি আমাদের ঘৃণা জানাতে হবে। এক্ষেত্রে পিছপা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি তীর হারা জাতিকে তীরের সন্ধান দিতে চেয়েছেন। তিনি মার্চ মাসের সাত তারিখে রেসকোর্স ময়দানে যে দিক নির্দেশনামূলক ভাষণ দিয়েছিলেন তারপরে মূলত আমাদের স্বাধীনতা পরোক্ষভাবে ঘোষণা হয়ে যায়। বাঙালি ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নিতে থাকে। এই প্রস্তুতির পরিপ্রেক্ষিতেই কিন্তু বাংলাদেশের চিত্রপট ধীরে ধীরে প্রতিদিন পাল্টাতে থাকে। বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে রাজনৈতিক প্রজ্ঞার মধ্যদিয়ে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত তৈরি করেন। ২৬ তারিখ প্রথম প্রহরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন।