‘ছাত্রলীগের মাথা না হয়ে সব শিক্ষার্থীর মাথা হোন’ - দৈনিকশিক্ষা

‘ছাত্রলীগের মাথা না হয়ে সব শিক্ষার্থীর মাথা হোন’

চবি প্রতিনিধি |
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্যকে কেবল ছাত্রলীগ নয়, সব শিক্ষার্থীর অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন ক্যাম্পাসে কর্মরত সাবেক সাংবাদিকরা।
 
ক্যাম্পাসে সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস) ও চিটাগং ইউনিভার্সিটি এক্স জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের (সিইউজিএন) উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে এমন কথা বলেন বক্তারা। বক্তারা মানববন্ধন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন।
 
তারা বলেন, এ ক্যাম্পাসে আমাদের আবেগ জড়িয়ে আছে। এখানে আমরাও সাংবাদিকতা করেছি। কিন্তু এমন মেরুদণ্ডহীন প্রশাসন আমরা আগে কখনো দেখিনি। মারজান আক্তারের (সমকাল প্রতিবেদক) ঘটনায় কয়েক দফায় তদন্ত কমিটি করেও তারা ব্যবস্থা নিতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে বলতে চাই, আপনি বেশিদিন এ চেয়ারে থাকতে পারবেন না। তবে সম্মানের সঙ্গে যাবেন কি না সেটা আপনার সিদ্ধান্ত। আপনি ছাত্রলীগের মাথা না হয়ে সব শিক্ষার্থীর মাথা হোন। এমন শাস্তির ব্যবস্থা করুণ, যাতে ভবিষ্যতে কেউ সাংবাদিকদের গায়ে হাত তোলার সাহস না পায়।
 
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। চবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমুর সঞ্চালনা ও চবিসাস সভাপতি মাহবুব এ রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে স্বাগত বক্তব্য দেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নবাব আব্দুর রহিম ও সদস্য মারজান আক্তার।
 
চবিসাসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক আজকের পত্রিকার চট্টগ্রাম ব্যুরো চিফ ও সিইউজেএনের সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ বলেন, গত দুই বছরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকদের ওপর বেশ কয়েকবার হামলা হয়েছে। সাংবাদিকদের ওপর হামলা নতুন কোনো ঘটনা নয়। হামলাকারীরা বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মানবিক আচরণ পেয়েছে। মনে রাখবেন, আমরা লিখতে যেমন জানি, প্রতিবাদ জানাতেও জানি।
 
চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক খন্দকার আলী আর রাজি বলেন, মারজান আক্তার, দোস্ত মোহাম্মদ, মোশাররফ শাহ- একে একে আমাদের বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন। প্রশাসন নূন্যতম দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। আমার মনে হয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা বরং খুশি হয়েছে সাংবাদিকদের মারধর করায়। কারণ সাংবাদিকরা প্রশাসনের বিভিন্ন দুর্নীতি অনিয়ম তুলে ধরছেন। এ সবকিছুর পেছনে অন্যতম কারণ হলো- এখানে ভিসি, প্রো-ভিসি এগুলা হঠাৎ নাজিল হয়। দলীয় লেজুড়বৃত্তি না করে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে যদি প্রশাসনের দায়িত্বে আসতেন তারা তাহলে তাদের দায়বদ্ধতা থাকতো। আমরা মোশাররফের ওপর হামলাকারীদের বিচারের পাশাপাশি প্রশাসনও যেন নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে হয়, সেই প্রত্যাশা করি।
 
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোরের ডেপুটি এডিটর তপন চক্রবর্তী বলেন, আপনারা নিজেরা নিজেরা মারামারি করেন, উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর চালান, এরপর আপনারা সাংবাদিকদের ওপরও হামলা চালান। আপনারা কি সত্যিই ছাত্রলীগ করেন কি না আপনাদের আচরণ দেখে সেটা বোঝার উপায় নেই। আপনাদের অবস্থা তো শিবিরের চেয়েও খারাপ। আমি উপাচার্যের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনি কেন তাদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন? প্রধানমন্ত্রী তো সাংবাদিকবান্ধব মানুষ। উনি তো কখনো এ ধরনের ঘটনা মেনে নেবেন না। আমরা জানতে পেরেছি আপনার ছত্রছায়ায় এখানে নিয়োগ বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ নানা অনিয়ম হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারেন, আমরা প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবো। তাই একদিনের মধ্যেই তাদের গ্রেফতারের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।
 
সমাপনী বক্তব্যে চবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাহবুব এ রহমান বলেন, যারা মোশাররফ শাহর রক্ত ঝরিয়েছে, তারা দেশের সব সাংবাদিকদের রক্ত ঝরিয়েছে। সাংবাদিকরা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে থাকে। আজকে সাংবাদিকরাই যদি নিরাপদ না হন, তাহলে এখানে শিক্ষার্থীরা কতটুকু নিরাপদ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলতে চাই, প্রতিটি ঘটনায় শুধুমাত্র আশ্বস্ত করেছেন, অথচ পরবর্তীতে বিচারের নামে প্রহসন করেছেন। আজকে বহিষ্কৃত সন্ত্রাসীরা ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে, পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে; এটা আপনাদের ব্যর্থতা। আমরা আশা করবো, মোশাররফসহ অতীতে সাংবাদিক নির্যাতনের সব ঘটনায় প্রশাসন দৃষ্টান্তমূলত ব্যবস্থা নিয়ে এ কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সমাপ্ত করবে।
 
এসময় চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক প্রক্টর ড. আলী আজগর চৌধুরী, একই বিভাগের শিক্ষক ও চবিসাসের সাবেক সভাপতি শাহাব উদ্দিন নিপু, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সাধারণ সম্পাদক ম. শামছুল ইসলাম, চবিসাসের সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক, দৈনিক আমাদের সময়ের চট্টগ্রাম ব্যুরো চিফ হামিদউল্লাহ, ডেইলি স্টার পত্রিকার চট্টগ্রাম ব্যুরো চিফ শিমুল নজরুল ইসলাম, সমকালের রিজিওনাল এডিটর সরোয়ার সুমন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ বছরের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে কমিটি - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ বছরের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে কমিটি স্কুলে ভর্তির আবেদন করবেন যেভাবে - dainik shiksha স্কুলে ভর্তির আবেদন করবেন যেভাবে এইচএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের ফল বৃহস্পতিবার, জানবেন যেভাবে - dainik shiksha এইচএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের ফল বৃহস্পতিবার, জানবেন যেভাবে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু ২ জানুয়ারি - dainik shiksha অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু ২ জানুয়ারি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা - dainik shiksha গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! - dainik shiksha দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! - dainik shiksha ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! গণভবন, ভিকারুননিসার বোন ও আইডিয়ালের কলোনি কোটা বাতিল - dainik shiksha গণভবন, ভিকারুননিসার বোন ও আইডিয়ালের কলোনি কোটা বাতিল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ভাসানী, শেরেবাংলা-সোহরাওয়ার্দীকেও জাতির পিতা করার পরামর্শ - dainik shiksha ভাসানী, শেরেবাংলা-সোহরাওয়ার্দীকেও জাতির পিতা করার পরামর্শ সমন্বয়কদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, সাবধান: সারজিস - dainik shiksha সমন্বয়কদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, সাবধান: সারজিস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035891532897949