ঢাকায় চার জন সদস্যের পরিবারে খাবার কিনতে প্রতি মাসে খরচ হয় সাড়ে ২৩ হাজার টাকা। আর খাদ্য তালিকা থেকে মাছ-মাংস বাদ দিলে এ খরচ দাঁড়ায় সাড়ে ৯ হাজার টাকায়। এমন অবস্থায় পরিবারের খাদ্যপণ্য কিনে এ শহরে টিকে থাকা নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
শনিবার সকালে ‘সংকটে অর্থনীতি: কর্মপরিকল্পনা কী হতে পারে?’ শীর্ষক এক সংলাপে এ তথ্য দিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
বিশ্ববাজারের সঙ্গে স্থানীয় বাজারের পণ্যমূল্য বৃদ্ধির অনেক পার্থক্য রয়েছে জানিয়ে গবেষকরা বলেন, বিশ্ববাজারে যে হারে পণ্যের মূল্য বাড়ছে, স্থানীয় বাজারে তারচেয়ে অনেক বেশি হারে বাড়ছে। বিশেষ করে চাল, আটা, চিনি ও ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমলেও স্থানীয় বাজারে এর প্রভাব নেই। এছাড়া অভ্যন্তরীণ উৎপাদিত পণ্যের দামও কোনো কারণ ছাড়াই ঊর্দ্ধমুখী। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমজীবীদের বেতন বৃদ্ধি করার তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।
দেশের ব্যাংকিং খাত সংস্কার ও মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় দক্ষ পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়ে সংলাপে গবেষক ও অর্থনীতিবিদরা বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত স্থিতিশীলতার জন্য অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। এছাড়া খেলাপি ঋণ বাড়ছে। ঋণ দেওয়ায় অনিয়ম এখনও আছে। এ বিষয়ে দক্ষতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এসময় সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, দেশে ব্যাংক খাতের যে দুর্বলতা তা (কোভিড-১৯) পরিস্থিতি কিংবা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে নয়। এ খাতে দুর্বলতা দীর্ঘদিনের।
তিনি আরও বলেন, খেলাপি ঋণ বেড়ে যাচ্ছে। এটার যদি উন্নতি না হয় তাহলে ব্যাংকগুলোতে মূলধনের ঘাটতি রয়েই যাবে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। এই নাম্বার সবার মুখস্থ। বাস্তবে যেটা দেখানো হয়, খেলাপি ঋণের পরিমাণ তারচেয়েও বেশি। এটা অর্থনীতিবিদরা এবং আইএমএফ বলছে। এর ভেতরে যদি আরও বেশ কিছু আনা হয়, ঋণের পরিমাণটা বেশি হবে। স্পেশাল মেনশন অ্যাকাউন্ট, লোন যেগুলো রয়েছে কোর্ট ইনজাকশনের মধ্যে এগুলো হিসাব দেওয়া হলে সেটা দ্বিগুণের বেশি হবে। প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রশাসনিক, আইন ও তথ্যগত দুর্বলতার কারণে ব্যাংকিং খাতে দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পিআরআই-এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান হাবিব মনসুর, বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন প্রমুখ।