‘আমার মা-বাপ (বাবা), আত্মীয়-স্বজনরা যা করতে পারেনি, তা সাংবাদিকরা করেছে। আমি খুবই খুশি। আমার বিপদে এতোগুলো সাংবাদিক পাশে দাঁড়িয়েছে। আমি কোনোদিন এতো দূরে আসতে পারতাম না, আমার চিকিৎসা ও মেশিন (অক্সিজেন কনসেনট্রেটর) কিনতে পারতাম না। আমাদের শেষ আশ্রয় সাংবাদিকরা। আল্লাহ আপনাদের (সাংবাদিক) ভালো করুক।’
শনিবার সকালে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন অক্সিজেনের পাইপ নাকে নিয়ে রিকশা চালানো মাইনুরজ্জামান সেন্টু। তিনি বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ১৪নং ওয়ার্ডের ১২নং বেডে চিকিৎসাধীন।
মাইনুরজ্জামান সেন্টু বলেন, ‘আমি আগের থেকে অনেক ভালো আছি। আল্লাহর রহমতে ডাক্তারা ভালো চিকিৎসা দিচ্ছেন। আমার আরও চারটি পরীক্ষা দিয়েছে। সেগুলোর রিপোর্ট দুই-তিনদের মধ্যে পেয়ে যাব। এরপরে ডাক্তার রিপোর্টগুলো দেখাবে। তেমন হলে মঙ্গল বা বুধবার রিলিজ পেতে পারি।’
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুরে রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ রামেক হাসপাতালে গিয়ে সেন্টুর সঙ্গে কথা বলে তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। এ সময় তিনি সেন্টুর যাবতীয় চিকিৎসার ভার নেন। একই সঙ্গে তার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার আশ্বাস দেন। এছাড়া শ্রম ও কর্মসংস্থাপন প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান সেন্টুর তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সহায়তার ঘোষণা দেন। এমপিপুত্র ও সমাজসেবক ফারাজ করিম চৌধুরী তাকে অর্থিকভাবে সহায়তা করেন মেশিন (অক্সিজেন কনসেনট্রেটর) কেনার জন্য। এছাড়া নাম প্রকাশ না করেও অনেকে সহায়তা করেছে।
হাসপাতালের ১৪নং ওয়ার্ডে চিকিৎসক ডা. নিশাদ জামি বলেন, সেন্টুকে প্রায় সব চিকিৎসকই চেনেন। কারণ তিনি এর আগেও মেডিসিন ওয়ার্ডগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন। আমরা তার চিকিৎসা দিচ্ছি। এখন তিনি আগের চেয়ে ভালো আছেন।
এর আগে গত ১৫ মে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে মাইনুরজ্জামান সেন্টুকে নিয়ে ‘অক্সিজেনের পাইপ নাকে নিয়ে রিকশা চালান তিনি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর ঘটনাটি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এই প্রতিবেদন দেখে অনেকেই তার দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।