‘স্যার’ ডাকা নিয়ে এখন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক গরম। ‘স্যার না বলায়’ রংপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ক্ষুব্ধ আচরণ করেছেন-এমন অভিযোগ তুলেছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক। এ ঘটনার প্রতিবাদে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিও শুরু করেছিলেন। অবশ্য ডিসি চিত্রলেখা নাজনীন সেদিন দুঃখ প্রকাশ করে ওই ঘটনার ইতি টানলেও ফেসবুকে সরকারি চাকরিজীবীদের ‘স্যার’ ডাকা না–ডাকা নিয়ে এখনো চলছে তুমুল আলোচনা।
জনগণ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের স্যার ডাকবে কেন? এমন আলোচনাই বেশি হচ্ছে। তাঁদের বক্তব্য, সরকারি চাকরিজীবী জনগণের সেবক। আর জনগণ প্রজাতন্ত্রের মালিক। সুতরাং সরকারি চাকরিজীবীদের স্যার ডাকতে হবে কেন? আবার দুই দিন ধরে ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে জারি করা তৎকালীন সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের একটি আদেশ ফেসবুকে ঘুরছে। যেখানে বলা আছে মৌখিক সম্বোধনে পুরুষের ক্ষেত্রে ‘স্যার’ ও নারীদের ক্ষেত্রে ‘ম্যাডাম’ ব্যবহার করা যেতে পারে।
এমন প্রেক্ষাপটে এ নিয়ে আজ শনিবার কথা হয় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে। মুঠোফোনে তিনি বলেন, সরকারি কর্মচারীরা জনগণের সেবক। তাঁদের স্যার বা ম্যাডাম ডাকার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ভদ্রতার খাতিরে অনেকে স্যার বা ম্যাডাম ডাকেন। কিন্তু এটি ডাকা বাধ্যতামূলক কিছু নয়। কেউ যদি আপা বা ভাই ডাকেন, তাতে দোষের কিছু নেই। এতে মাইন্ড করারও কিছুই নেই। সরকারি চাকরিজীবীরা জনগণের সেবক-এই চিন্তা থেকেই কাজ করতে হবে।
এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদের কথা মনে করিয়ে দেন। যেখানে বলা হয়েছে ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ; এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হবে।’
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এর আগে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত এক সংলাপ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, সরকারি সেবা নিতে আসা জনসাধারণকে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ বা ‘ম্যাডাম’ বলে সম্বোধন করতে হবে, এমন কোনো নীতি নেই।
পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, এই ‘স্যার’ ডাক নিয়ে মাঝেমধ্যেই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। তাই অনেকে বলছেন, বিদ্যমান প্রেক্ষাপটে এখন কাদের কী সম্বোধন করতে হবে, সে বিষয়ে একটি লিখিত নির্দেশনা থাকা দরকার।