কুমিল্লার নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. মজিবল হায়দর চৌধুরীকে যোগদানের চার মাসের মাথায় বদলি করায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
আজ রোববার সকালে কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি নাঙ্গলকোট পৌর সদর বাজারের কয়েকটি সড়ক ঘুরে ফের কলেজ প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
সেই সঙ্গে অধ্যক্ষ ড. মো. মজিবল হায়দর চৌধুরীর বদলির আদেশ প্রত্যাহার করে একই প্রতিষ্ঠানে ফের অধ্যক্ষের দায়িত্বে বহাল রাখার জন্য প্রায় চারশ’ শিক্ষার্থীর গণস্বাক্ষর দিয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক (ডিসি) খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান মেহেবুবের নিকট একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষক-শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, এক সময় নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল সরকারি কলেজে ছিল হযবরল অবস্থা। শিক্ষার মান ছিল না বললেই চলে। পরীক্ষার সময় চলত নকল। পরে কলেজটিকে জাতীয়করণ করা হয়। এরপর অধ্যক্ষ আসে যায় কিন্তু ভাগ্য বদলায়নি এ কলেজের শিক্ষার্থীদের।
চলতি বছরের ১১ জুন অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন ড. মো. মজিবল হায়দর চৌধুরী। তিনি আসার পরে নিয়মিত ক্লাস, শিক্ষার্থীদের শতভাগ উপস্থিতি, কলেজে চলাকালে সকল গেইট বন্ধ রাখাসহ নানামুখী উন্নয়নকাজ পরিচালনা করেন তিনি। এতে এলাকার মানুষের কাছে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। তবে গত ১৮ অক্টোবর ড. মো. মজিবল হায়দর চৌধুরীকে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে বদলি করা হয়। এতে মন ভেঙে যায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া, জান্নাত, বিউটি আক্তার ও দ্বাদশ শ্রেণির ইয়াছিন ও সানজিদা আক্তার বলেন, এ অধ্যক্ষকে দেখে এই কলেজে ভর্তি হই। এখন যদি তিনি চলে যান, আমরাও ছাড়পত্র নিয়ে চলে যাব। কারণ এখানে আর লেখাপড়া হবে না। আর কোনো ভালো শিক্ষক এ প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে পারবে না। তাই আজকে কলেজ বন্ধের দিনেও আমরা কলেজে এসে স্যারের বদলি প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। আমাদের দাবি না মানা হলে আরো কঠোর আন্দোলন করা হবে।
এ বিষয়ে অভিভাবক ইউছুফ ভূইয়া বলেন, গত চার মাসে নাঙ্গলকোট সরকারি কলেজের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। যা কলেজ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর বিরল। ছেলেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করেছিলাম বর্তমান অধ্যক্ষকে দেখে।
এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রায়হান মেহেবুব বলেন, অধ্যক্ষকের বদলি প্রত্যাহারের দাবিতে ছাত্র-ছাত্রীরা একটি স্মারকলিপি দিয়েছে। আমরা স্মারকলিপি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রদান করব। সেখান থেকে যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাই হবে।