শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে প্রতিবেশীর ওপর হামলা করে জমি দখল করার অভিযোগ উঠেছে এক মাদরাসার পরিচালক ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। এই হামলার ঘটনায় আহত হয়ে ৬ জন সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে এই ঘটনার তিন দিনেও পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন ক্ষতিগ্রস্ত আহত কৃষক আব্দুল মতিন।
তিনি জানান, গত বুধবার বিকেলে লক্ষ্মীপুর সদরসদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ এলাকায় তার জমি দখল করার জন্য চর মটুয়া মাদরাসার কিশোর শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দেন অধ্যক্ষ মাওলানা আবু তাহের। শিক্ষার্থীরা নির্দেশ পেয়েই হাতে তুলে নেয় লাঠিসোটা, দা-বটিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র।
কৃষক আব্দুল মতিন জানান, তার জমিতে গিয়ে মাদরাসা শিক্ষার্থীরা গাছপালা কেটে লণ্ড ভণ্ড করে দেয়। এসময় তিনি ও তার পরিবারের লোকজন বাধা দিলে ছাত্র ও মাদরাসার শিক্ষকরা মিলে নারী-পুরুষের ওপর হামলা চালায়। ওই হামলায় তিনি, ইয়াছিন, রহিম, আল আমিন ও গৃহিনী হিনজুনী বেগমসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এরমধ্যে রহিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। অন্যদের চিকিৎসা চলছে সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে।
এদিকে মাদরাসা অধ্যক্ষ আবু তাহেরের এমন কাজের জন্য সমালোচনা করে অভিভাবকরা বলেন, মাদরাসায় সন্তান দিয়েছি লেখা-পড়ার জন্য। কিন্তু অধ্যক্ষ তাদের হাতে দেশীয় অস্ত্রদিয়ে তাদেরকে সন্ত্রাসী বানাচ্ছে এবং অন্যের জমি জোর করে দখল করছে।
সমাজে শান্তি চাই উল্লেখ করে একই এলাকার আল আমিন জানান, জমি নিয়ে বিরোধ থাকলে আইন আদালতের মাধ্যমে তা সমাধান করা যায়। কিন্তু মাদরাসা শিক্ষার্থীদের হাতে অধ্যক্ষ দেশীয় অস্ত্র তুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পরিবর্তে সন্ত্রাসী বানাবে এমনটা কোন বাবা-মা চায় না। প্রশাসনের নিকট এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন তিনিসহ এলাকাবাসী।
অধ্যক্ষ মাওলানা আবু তাহের জানান, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের হামলা করার চেষ্টা করলে অপর শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ধার করতে যায়। এসময় মাদরাসার একজন শিক্ষার্থীও আহত হয়।
শিক্ষার্থীদের হাতে লাঠি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সহপাঠীকে মারধর করবে আর অপর শিক্ষার্থীরা তাদের রক্ষা করতে যাবে না এটা কেমন কথা।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলে উদ্দিন জানান, মাদরাসার শিক্ষার্থীদের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দৌড়ে যাওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে শিক্ষার্থীরা যে ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করেছেন সেগুলো বহন ও ব্যবহার বেআইনি। এই ঘটনায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি এমনকি থানায় কেউ মামলা করতেও আসে নাই। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।