অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগমের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে কলেজের শিক্ষক নিয়োগ ও গভর্নিং বডির সদস্যদের তথ্যসহ তিন ধরনের নথি তলব করেছে দুদক।
দুদক সূত্র জানায়, ২ নভেম্বর সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় থেকে তথ্য চেয়ে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে। ওই চিঠিতে ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর পর্যন্ত যেসব শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের তথ্য চাওয়া হয়েছে।
চিঠিতে আইডিয়াল স্কুলে এখন পর্যন্ত কয়টি শাখা খোলা হয়েছে এবং এসব শাখার অনুমোদন রয়েছে কি না, সেসব তথ্যের পাশাপাশি ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে থেকে এখন পর্যন্ত যেসব ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সদস্য হয়েছেন, সেই তালিকাও জানতে চেয়েছে দুদক। ১৩ নভেম্বরের মধ্যে চিঠির জবাব দিতে বলা হয়েছে।’
২০২১ খ্রিষ্টাব্দের আইডিয়ালের তৎকালীন অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম ও প্রতিষ্ঠানটির হিসাবরক্ষক এবং উপসহকারী পরিচালক আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ভর্তি-বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে শতকোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে।
দুদকের সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান সরকার ও আফনান জান্নাত কেয়াকে ওই অভিযোগ অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় তখন। সে বছরই শাহান আরা বেগম ও আতিকুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদক কর্মকর্তারা। চলতি বছরের মার্চ মাসে অনুসন্ধানের প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দেয় দুদক। ওই প্রতিবেদনে শাহান আরার সাড়ে ৪ কোটি টাকার বেশি পরিমাণ সম্পদের সত্যতা পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন ও আয়কর নথির হিসাব অনুযায়ী জানা যায়, অধ্যক্ষ শাহান আরার নামে বসুন্ধরায় ২ দশমিক ৫ কাঠার একটি প্লট, রাজধানীর সূত্রাপুরে ১ হাজার ৭৪০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, উত্তরার হরিরামপুরে ২ দশমিক ৫ কাঠার একটি প্লট এবং আফতাবনগরে ১ হাজার ৪৯০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট আছে। সব মিলিয়ে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদের তথ্য মিলেছে। অন্যদিকে, অস্থাবর প্রায় ২ কোটি টাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ২৬ লাখ টাকার এফডিআর, প্রায় ২০ লাখ টাকার ডিপিএস উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া টয়োটা মডেলের একটি গাড়ির মালিকানা রয়েছে শাহান আরা বেগমের নামে। =
দুদকের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, যেকোনো অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে কমিশন থেকে অনুমোদন দেওয়ার পর অনুসন্ধান শুরু হয়। আইডিয়ালের সাবেক অধ্যক্ষের দুর্নীতির বিষয়েও দুদক আইন ও বিধি অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।