দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটামের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে এই দুইজনকে নজরদারিতে রাখা হয়ছিল। তারা পুলিশের হেফাজত রয়েছেন।
তবে গোয়েন্দারা তাদের কোথা থেকে এবং কখন নিজেদের হেফাজতে নিয়েছেন তা বলেননি তিনি।
অপর এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, কুমিল্লা পুলিশের একটি দল ঢাকার পথে রয়েছে। আটক এ দুইজনকে তাদের কাছে হস্তান্তর করবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
কুমিল্লা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, আমাদের একটি টিম এ নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের সঙ্গে কাজ করছে। এ নিয়ে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী ও শিক্ষক দ্বীন ইসলামকে গ্রেফতারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।
এই দাবি পূরণ না হলে সোমবার উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ার দেয়া হয় শনিবার আয়োজিত এক সমাবেশে।
কুমিল্লা সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক প্রয়াত অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের মেয়ে ফাইরুজ শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও ‘পিসি পার্ক স্মরণিকা’ নামের ১০ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলার বাসায় গলায় রশি বেঁধে ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।
মৃত্যুর ১০ মিনিট পূর্বে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এ ঘটনার জন্য আম্মান সিদ্দিকী নামে তার এক সহপাঠীকে দায়ী করেছেন। একইসঙ্গে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকেও এ ঘটনার জন্য দায়ী করেন।
আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আগে নিজের ফেইসবুক পেইজে দীর্ঘ একটি লেখা পোস্ট করেন অবন্তিকা।
তিনি লেখেন, ‘আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম।’
অবন্তিকার মৃত্যুর খবর ক্যাম্পাসে আসার পথ থেকে তার সহপাঠীসহ শিক্ষার্থী বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। শনিবার সকাল থেকেও ক্যাম্পাসে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।
এদিন বেলা ৩টার দিকে ক্যাম্পাসের শান্ত চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। সেটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকা ঘুরে ফের শান্ত চত্বরে এসে সমাবেশে রূপ নেয়। পরে সেখান থেকে দুইজনকে গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দেয়া হয়।