অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - দৈনিকশিক্ষা

অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ

সুতীর্থ বড়াল, দৈনিক শিক্ষাডটকম |

সুতীর্থ বড়াল, দৈনিক শিক্ষাডটকম: বেসরকারি স্কুলগুলোকে শিক্ষকদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ তহবিলে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা ৫ কর্ম দিবসের মধ্যে ব্যাংকে জমা দিয়ে তার তথ্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।

সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দিয়েছে। 

এর আগে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে এই কার্যক্রম শুরু হয়। সর্বশেষ চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেয়া হয়, অধিদপ্তর থেকে পাঠানো ব্যাংক হিসাব নম্বরে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই সংগৃহীত টাকা জামা দেবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এর সুফল মেলেনি। কয়েকটি ছাড়া বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই টাকা জমা দেয়ার নির্দেশনা মানেনি। তাই এবার মাউশি অধিদপ্তর কড়া নির্দেশনা দিয়েছে।

২০২২ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ভর্তি নীতিমালা’র উপানুচ্ছেদ ১০ ও ৬-এ বলা হয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিলের জন্য ভর্তিকালীন শিক্ষার্থী প্রতি ১’শ টাকা গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট হিসাব খাতে জমা দিতে হবে। এখানে ৭০ টাকা অবসর এবং ৩০ টাকা কল্যাণ তহবিলের হিসাব খাতে জমা দিতে হবে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ ডিসেম্বর দুটি আলাদা চিঠির মাধ্যমে নতুন ভর্তি করা শিক্ষার্থীদের দেয়া ১’শ টাকা পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ও নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আলাদা তহবিলে রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়।
 
পরবর্তীতে আবারো ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর ও চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি আরো দুই চিঠির মাধ্যমে মাউশি অধিদপ্তর থেকে পাঠানো নির্ধারিত ব্যাংক হিসাব নম্বরে টাকা জমা দিয়ে সেই তথ্য সংশ্লিষ্ট জেলা শিক্ষা অফিসারদের অধিদপ্তরে পাঠাতে বলা হয়।

তবে কিছু জেলা ছাড়া অধিকাংশ জেলা থেকে তথ্য এখনো জমা হয়নি। তাই মাউশি অধিদপ্তর বলছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভর্তি নীতিমালার আলোকে নতুন ভর্তি করা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সংগৃহীত টাকা উল্লেখিত হিসাব নম্বরে জমা দিয়ে সেই সম্পর্কিত তথ্য ৫ কর্মদিবসের মধ্যে নির্ধারিত ছকের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। এ বিষয়টি অতিব জরুরি বলেও উল্লেখ করেছে অধিদপ্তর।

জানা গেছে, অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট বাবদ ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অনার্সে ভর্তি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বছরে ২২০ কোটি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করা হয়েছিলো। কিন্তু শুধু ষষ্ঠ শ্রেণি ও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১৩ কোটি। অন্যান্য শ্রেণি থেকে টাকা আদায় শুরুই করা যায়নি। সব শ্রেণি থেকে টাকা আদায় করা হলেও পৌনে দু’শ কোটি টাকার বেশি উঠবে না। ফলে কেবল অবসর সুবিধাখাতেই ঘাটতি থাকবে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। 

এদিকে এমপিও থেকে প্রতি মাসে কেটে নেয়া ১০ শতাংশ টাকা ও সে টাকার হিসাব না পেয়েও অসন্তুষ্ট শিক্ষকরা। 

প্রসঙ্গত, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে একাদশে ভর্তির সময় থেকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিক্ষকদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য ১০০ টাকা করে তোলা শুরু হয়। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে স্কুলে ভর্তির সময়ও তোলা হয়েছে ১০০ টাকা করে। সূত্র বলছে, ষষ্ঠ থেকে মাস্টার্স শ্রেণির ১ কোটি ৭৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫২২ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ভর্তির সময় ১০০ টাকা করে নিয়ে বছরে ১৭৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা জোগাড়ের পরিকল্পনা ছিলো। এর বাইরে এসএসসি, এইচএসসি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোতে স্নাতক (পাস), স্নাতক (সম্মান) ও মাস্টার্স পর্যায়ে ৪৫ লাখ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ফরম পূরণ বাবদ ৪৫ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছিলো। 

এছাড়া স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও থেকে প্রতিমাসে ৩২ কোটি টাকার বেশি কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য ও প্রায় ৪৯ কোটি টাকা অবসর সুবিধা বোর্ডের জন্য কেটে রাখা হয়। আর মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষকদের এমপিও থেকে প্রতিমাসে এ দুই খাতের জন্য কেটে রাখা হয় ৩২ কোটি টাকার বেশি। প্রতি মাসে শিক্ষকরা ১১৩ কোটি টাকা নিজেদের এমপিও থেকে এ দুই খাতে দেন। সে হিসেবে বছরে এ দুই খাতে শিক্ষকরা দেন ১ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা। সময়মতো টাকা না পাওয়ায় তাই শিক্ষকের ভেতরে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

 

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল - dainik shiksha জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় - dainik shiksha শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033469200134277