জাতীয় সংসদের এক সদস্যের বাগানবাড়ি থেকে গত বছর তিনটি হনুমান জব্দ করেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। বিপন্ন প্রজাতির এ হনুমান লালন-পালন করা আইনে নিষিদ্ধ হলেও তা জানতেন না বলে সে সময় ওই সংসদ সদস্য জানিয়েছিলেন। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বণিক বার্তা পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন সাইফুল ইসলাম বাপ্পী।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায় শুধু ওই সংসদ সদস্য নয়, দেশের বিত্তশালী সম্প্রদায়ের অনেককেই এমন অননুমোদিতভাবে বন্যপ্রাণী পুষতে দেখা যায়। কারো কারো বাড়িতে শোভা পায় বন্যপ্রাণীর বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ (যেমন গণ্ডার বা হরিণের শিং, হাতির দাঁত, বাঘছাল ইত্যাদি)। কেউ শখ পূরণ করতে গিয়ে বা কেউ আভিজাত্যের প্রদর্শন হিসেবে এ ধরনের বন্যপ্রাণী বা প্রাণীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংগ্রহ করে থাকেন। অভিযোগ রয়েছে, এসব প্রাণী বা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বড় একটি অংশ অবৈধভাবে সংগৃহীত। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা বিদেশ থেকে আনা হয়েছে পাচার বা অননুমোদিত আমদানির মাধ্যমে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে মালি থেকে আনা চারটি বিপন্ন প্রজাতির গ্রিভেট বানর আটক করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এয়ার ফ্রেইট ইউনিট। অননুমোদিতভাবে আমদানীকৃত বানরগুলোকে নিয়ে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটকে চিঠি পাঠান বিমানবন্দর কর্মকর্তারা। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তারা সেগুলোকে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে কোয়ারেন্টিনের জন্য ছেড়ে দেন। এ জাতীয় বানরের একেকটির মূল্য সাড়ে ৪ হাজার ডলার বা তার বেশি।
এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী পাচার কার্যক্রমের বড় একটি কেন্দ্র হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে বাংলাদেশের নাম উঠে এসেছে। বেশকিছু গবেষণায় এর সপক্ষে নানা পরিসংখ্যান ও তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে। বন্যপ্রাণী চোরাচালানের আন্তর্জাতিক রুটে সরবরাহকারী ও গন্তব্য—দুই ভূমিকাই পালনের অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশী চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে। আবার দেশের মধ্যেই তারা গড়ে তুলেছে বন্যপ্রাণী কেনাবেচার বাজার, যার ক্রেতাদের বড় অংশ হলো অভিজাতরা।
তাদের এ শখ পূরণ অব্যাহত থাকলে বিষয়টি যেকোনো সময়ে বাংলাদেশের জন্যও বড় বিড়ম্বনার কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা পরিবেশবাদী ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ-সংশ্লিষ্টদের। তারা বলছেন, বিভিন্ন দেশের সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো এখন বন্যপ্রাণী চোরাচালান প্রতিরোধে শক্ত অবস্থান নিচ্ছে।
চোরাকারবারিদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ যুক্তরাষ্ট্রকে এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্রের সঙ্গে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিধিনিষেধ আরোপসহ নানা পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে। চোরাচালান প্রতিরোধে ব্যর্থতার কারণে বিভিন্ন দেশকে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে নানা বিড়ম্বনার মুখেও পড়তে হচ্ছে।আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী চোরাচালানে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গত বছরের অক্টোবরে মালয়েশিয়াভিত্তিক তিন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে একই অভিযোগে বিভিন্ন দেশের সংস্থা ও ব্যক্তির ওপর এ ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ট্রেজারি বিভাগের অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল (ওএফএসি)।
বিধিনিষেধকে বন্যপ্রাণী পাচার প্রতিরোধে শক্ত একটি হাতিয়ার হিসেবে দেখছে গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অ্যাগেইনস্ট ট্রান্সন্যাশনাল অর্গানাইজড ক্রাইম। ২০২১ সালে জি-৭ জোটভুক্ত দেশগুলোকে বন্যপ্রাণী ও বন্যপ্রাণীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পাচার প্রতিরোধে বিধিনিষেধ আরোপকে শক্তভাবে কাজে লাগানোর আহ্বান জানায় জেনেভাভিত্তিক সংস্থাটি। সে সময় সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, জি৭ দেশগুলোর উচিত হবে এখন লক্ষ্যভিত্তিক বিধিনিষেধ আরোপের মাধ্যমে কীভাবে সর্বোচ্চ ফলাফল আদায় করে নেয়া যায় সে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা। যাতে গুরুতর পরিবেশগত অপরাধ দমনে বিষয়টিকে কাজে লাগানো যায়।
আবার জাতিসংঘেও ২০১৩ সালে বাংলাদেশের প্রতিবেশী নেপালসহ সাত দেশের ওপর বন্যপ্রাণী পাচার রোধে শক্ত অবস্থান নেয়ার অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আলোচনা শুরু হয়। কনভেনশন ফর ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইন এন্ডেঞ্জারড স্পেসিস অব ওয়াইল্ড ফনা অ্যান্ড ফ্লোরায় (সিআইটিইএস) স্বাক্ষরকারী দেশ হয়েও বন্যপ্রাণী পাচার দমনে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছিল দেশগুলোর বিরুদ্ধে।
সিআইটিইএসে সই করা ১৭৫ দেশের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী পাচারকারী নেটওয়ার্কগুলোর সক্রিয়তা বেড়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী পাচারের বড় একটি রুট হিসেবে বাংলাদেশের নাম উঠে এসেছে। আবার দেশের অভিজাত সম্প্রদায়ের অনেকেরই ব্যক্তিগত সংগ্রহে এখন বন্যপ্রাণী বা বন্যপ্রাণীর চামড়া-দাঁত-শিংসহ দেহের অংশবিশেষ দেখা যায়, যা মূলত অবৈধ উপায়ে সংগ্রহ করা। মূলত পাচারকারীদের কাছ থেকে বা স্থানীয় চোরাই বাজার থেকে এসব বন্যপ্রাণী ও বন্যপ্রাণীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
শুধু ব্যক্তিগত সংগ্রহ নয়, ব্যক্তিমালিকানাধীন রিসোর্ট বা প্রমোদ কেন্দ্রগুলোয়ও অনেক সময় অননুমোদিত উপায়ে সংগৃহীত বন্যপ্রাণী রাখতে দেখা যায়। বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে ইউনিটটি পাচার বা বিক্রির সময়ে মোট ২ হাজার ৭৫৩টি বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে উদ্ধার হয়েছে যথাক্রমে ৩১৫ ও ১০৮টি। উদ্ধারকৃত প্রাণীগুলোর মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির সরীসৃপ, ভালুক, বনবিড়াল, শিয়াল, বানর, হরিণ ও হনুমানের সংখ্যাই বেশি।
অননুমোদিত পন্থায় অভিজাতদের বন্যপ্রাণী সংগ্রহের বিষয়টি দেশের জন্য বড় বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান রাশেদ আল মাহমুদ তীতুমীর এ বিষয়ে বলেন, বন্যপ্রাণী পাচার দেশের জন্য হুমকির কারণ হয়ে উঠতে পারে। এটিকে ছোট করে দেখার কোনো উপায় নেই। এখানে আলোচ্য বিষয় হলো তিনটি। প্রথমত, দেশে বিপন্ন প্রজাতির সংখ্যা বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে বেশি। দ্বিতীয়ত, আইনি কাঠামো যেমন প্রতিপালন হয় না; তেমনি আবার ফাঁকফোকরের অপব্যবহারেরও চেষ্টা আছে। তৃতীয় বিষয় হলো মানব পাচার যেমন দেশকে একধরনের হুমকি বা ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে, তেমনি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করতে না পারা এবং এগুলোর পাচার দমনে ব্যবস্থা নিতে না পারাও অনেক ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির কারণ হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও হংকংয়ের তিন প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞদের এক যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে পাচারকৃত বন্যপ্রাণীর বড় ক্রেতা এখন অভিজাত-ধনী সম্প্রদায়ের মানুষরা। তাদের অনেকেই শুধু আভিজাত্য প্রদর্শনের জন্যই এসব প্রাণী বা প্রাণীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ (চামড়া, হাড়, দাঁত, শিং ইত্যাদি) সংগ্রহ করে থাকেন। ‘লন্ডারড অ্যালাইভ? দ্য ট্রান্সন্যাশনাল ট্রেড ইন ওয়াইল্ড ফেলিডস থ্রু বাংলাদেশ’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি গত ডিসেম্বরে প্রকাশ হয়েছে।
এছাড়া বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটও বিভিন্ন সময়ে ব্যক্তিমালিকানাধীন চিড়িয়াখানা ও রিসোর্ট থেকেও বিলুপ্ত বা বিপন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী উদ্ধারের কথা জানিয়েছে। বিপন্ন প্রজাতির বাঘ বা বিড়াল গণভুক্ত বন্যপ্রাণী বৈধভাবে আমদানি বা রফতানি করতে হলে সিআইটিইএসের পারমিটের প্রয়োজন হয়। বিভিন্ন সময়ে এ পারমিটের অপব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে। এক্ষেত্রে অনুমোদিতের চেয়ে বেশি সংখ্যক প্রাণী আমদানি, পারমিট পুনর্ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও হংকংয়ের গবেষকরা দাবি করেছেন।
বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল, ঢাকার বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, ‘পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য অপরাধের তালিকায় বন্যপ্রাণী পাচার চতুর্থ। এটি ঠেকাতে আমাদের অপরাধ দমন ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে। এটি বাড়তে থাকলে আমরা আন্তর্জাতিক চাপের পাশাপাশি এমনিতেও আরো অনেক সমস্যায় পড়ার শঙ্কা করতেই পারি।’
এছাড়া দেশে এখন বন্যপ্রাণী কেনাবেচাকেন্দ্রিক সিন্ডিকেট গড়ে ওঠার তথ্যও পাওয়া যায়। চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারের নূপুর মার্কেট, দেওয়ানহাটসহ বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে বলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তাদের তথ্যে উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, এখানে বিধিনিষেধের ভয়ের চেয়েও সবচেয়ে বড় ইস্যু বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ। বিষয়টি নিয়ে আমাদের সক্রিয়তা অনেক বেশি বাড়ানো উচিত। বিধিনিষেধের আশঙ্কা পুরোপুরি দৃশ্যমান হওয়ার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করার বিষয়টি মোটেও ভালো কিছু না।
বন্যপ্রাণী পাচারের অভিযোগটিকে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলো বেশ গুরুত্ব দিয়েই দেখে বলে বিভিন্ন সময়ে তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে। মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের এক বিবৃতির ভাষ্যমতে, বন্যপ্রাণী পাচার শুধু আইনের শাসনকেই ক্ষুণ্ন করে না; একই সঙ্গে তা যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জাতীয় নিরাপত্তাকেও ব্যাহত করে। এ বিষয়ে মার্কিন ফেডারেল বন্যপ্রাণী পাচার আইনের পরিপন্থী যেকোনো কার্যকলাপে সংশ্লিষ্টদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের উদ্যোগ গ্রহণে ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
লন্ডন ইললিগ্যাল ওয়াইল্ডলাইফ ট্রেড কনফারেন্সের ২০১৮ সালের আয়োজনে মার্কিন প্রতিনিধি দলের প্রধান দেশটির তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস বলেছিলেন, আন্তঃসীমান্ত বন্যপ্রাণী পাচারের সঙ্গে বেশকিছু অপরাধী নেটওয়ার্ক জড়িত। অনেকটা অবাধেই তারা বিশ্বব্যাপী বন্যপ্রাণী পাচার করছে এবং সর্বোচ্চ মূল্যদাতার কাছে বিক্রি করছে। কোনো দেশের সীমান্ত নিয়ে তারা তখনই সচেতনতা দেখায়, যখন তারা এর আড়ালে লুকানোর চেষ্টা করে। আমাদের দায়িত্ব হলো তাদের থামানো।
বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী ও এর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পাচার কার্যক্রমের ওপর গভীর নজরদারি চালাচ্ছে সিআইটিএস। কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর প্রতি বছরই পাচারকালে আটক করা বন্যপ্রাণীর তথ্য সিআইটিএসকে জানানোর নিয়ম রয়েছে। সংস্থাটির বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী পাচারকালে আটকের তথ্য দেয়া হচ্ছে খুবই কম। প্রতি পাঁচটি আটকের মধ্যে সর্বোচ্চ দুটির তথ্য দিচ্ছে বাংলাদেশ। ২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে মোট ১০৫টি প্রাণী পাচারের তথ্য পাওয়া গেছে।
জানতে চাইলে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক মো. ছানাউল্যা পাটওয়ারী বলেন, ‘বাংলাদেশে আগের চেয়ে অনেক বন্যপ্রাণী পাচার কমেছে। অনেক ক্ষেত্রে বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় উঠে আসে বাংলাদেশে বন্যপ্রাণী পাচার বেড়েছে। কিন্তু সে গবেষণাগুলোর যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ আছে। বিদেশীরা তো আমাদের দেশে এসে কোনো গবেষণা করে না। তারা বাংলাদেশী কারো সহযোগিতা নিয়ে গবেষণা করে।’
বন্যপ্রাণী পাচার ইস্যু বাংলাদেশকে কোনো ঝুঁকিতে ফেলবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার অভিজ্ঞতা বলছে কোনো নিষেধাজ্ঞায় আমরা পড়ব না। কারণ বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে দশ নম্বর রুট। বাঘ, হাতির দাঁত—এ ধরনের বড় বড় বন্যপ্রাণী বা প্রাণীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পাচার এখন আমাদের দেশে হয় না বললেই চলে। কিছু পোষা প্রাণী পাচার হচ্ছে। এতে ঝুঁকিতে পড়ব বলে মনে হয় না। কিন্তু সমস্যার আশঙ্কা যে নেই এ কথাও নিশ্চিত করে বলা যায় না।’