প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে সোমবার দেশ ছেড়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। টানা চারবার ক্ষমতায় আসার পরও ছাত্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে হয় তাকে। তিনি বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার খবরের দেশের বিভিন্ন জায়গায় থানা, সরকারি অফিস ভবন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাসভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এসব ঘটনায় মারা গেছেন পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন। নিহত হয়েছে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। বিভিন্ন স্থানে আটকও করা হয়েছে দলটির নেতাকর্মীদের।
এরপর শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছিলেন তার মা আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। এর আগে এক বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, তার মা ক্ষমতা ছাড়ার পর দেশের কী হলো সেটি দেখার দায়িত্ব তাদের না। তবে এবার নিজের সেই বক্তব্য ফিরিয়ে নিলেন জয়। আহ্বান জানালেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সাহস নিয়ে দাঁড়ানোর। বললেন, বঙ্গবন্ধু পরিবার আওয়ামী লীগ ও দেশের মানুষের পাশে আছে।
বুধবার (৭ আগস্ট ) রাতে এক ভিডিওবার্তায় এ আহ্বান জানান সজীব ওয়াজেদ জয়।
ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, “বাংলাদেশে এখন একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি চলছে। সারাদেশে ভাঙচুর-লুটপাট হচ্ছে। শহরের বাইরে আমাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চলছে। অনেককে হত্যা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমিবলতে চাই; আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন এবং সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দল। আওয়ামী লীগ কিন্তু মরে যায়নি। আওয়ামী লীগ এই বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে। আওয়ামী লীগকে শেষ করা সম্ভব না।”
এরপর তিনি বলেন, “আমি বলেছিলাম যে আমার পরিবার আর রাজনীতি করবে না। তবে নেতাকর্মীর ওপর যেভাবে হামলা হচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে আমরা হাল ছেড়ে দিতে পারি না।”
জয় বলেন, “যদি গণতান্ত্রিক নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হয়, তবে সেটি আওয়ামী লীগ ছাড়া সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ কোথাও যাবে না, আওয়ামী লীগকে শেস করা যাবে না।”
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা সাহস নিয়ে দাঁড়ান। আপনারা একা না, আমরা আছি, বঙ্গবন্ধুর পরিবার কোথাও যায়নি। আমরা আপনাদের সাথেই আছি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও দেশকে রক্ষার জন্য যা প্রয়োজন আমরা করতে প্রস্তুত।”
এরপর তিনি বলেন, “বর্তমান যারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের বলব; আমরাও একটি গণতান্ত্রিক শৃঙ্খল নিরাপদ বাংলাদেশ চাই। জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ চাই। তার জন্য আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত; যদি তারা জঙ্গিবাদ ও সহিংসতা বাদ দেয়।”
সবশেষে তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা মরে যাননি। আমরা কোথাও যাইনি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ছাড়া গণতন্ত্র-নির্বাচন সম্ভব না।”