নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখলের উদ্দেশ্য এক স্কুল শিক্ষককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। সাহাব উদ্দিন (৫০) নামের ওই আওয়ামী লীগ নেতাসহ তিনজনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) নোয়াখালীর আদালতে মামলা হয়েছে।
জেলার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মামলাটি দায়ের করেন সুবর্ণচরের কেরামতপুর এমএস উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. ফখরুল ইসলাম।
মামলায় সাহাব উদ্দিনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। অপর দুই আসামি হলেন সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চরতোরাব আলী গ্রামের প্রয়াত মো. আবদুল হোসেনের ছেলে পল্লী চিকিৎসক মো. বোরহান উদ্দিন (৬০) ও তার ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (৩০)।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. সালাউদ্দিন সাকি এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া ইসলাম বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এ বিষয়ে আদালতে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদেশ দিয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, আসামি মো. বোরহান উদ্দিন বাদী মো. ফখরুল ইসলামের আপন বড়ভাই এবং সাহাব উদ্দিন মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি।
বাদীর অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে স্কুল শিক্ষক মো. ফখরুল ইসলামকে বাজারে যাওয়ার পথে আসামিরা প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন। মেম্বার সাহাব উদ্দিন তাকে গলা চেপে হত্যার চেষ্টা এবং বোরহান উদ্দিন ও তার ছেলে আনোয়ার হোসেন লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের জন্য আমার চরতোরাব আলী মৌজার খরিদা ৫৪ শতাংশ জমি বিক্রির চেষ্টা করে আসছি। বোরহান উদ্দিন জমিটি কিনবেন বলে বায়না করেন। কিন্তু ছেলের প্রভাব দেখিয়ে মেম্বার সাহাব উদ্দিন ওই জমি দখলের পাঁয়তারা করেন। তিনি (সাহাব উদ্দিন) ওই জমি কিনতে বোরহান উদ্দিনকে নিষেধ করেন এবং অন্যত্র বিক্রিতেও বাধা দিচ্ছেন। আমি এর প্রতিবাদ করায় আসামিরা আমার ওপর হামলা করে। আমি প্রতিকার চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছি।’
বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘ফখরুল ইসলামের ছেলে মোবারক হোসেন আমার স্বাক্ষর করা একটি চেক ব্যাংকে জমা দেয়ায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। তাই এ নিয়ে বুধবার ফখরুল ইসলামের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। আমাদের সঙ্গে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
অভিযুক্ত সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘জমি বেচাকেনা নিয়ে দীর্ঘদিন তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এর মীমাংসা করার চেষ্টা করেন স্থানীয় সালিশদার মাওলানা রেদোয়ান বারি। বুধবার ফখরুল ইসলামের ছেলে মোবারক হোসেন মাওলানা বারির ওপর তেড়ে গেলে তাকে চড়-থাপ্পড় দিয়েছি।’