চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীকে হত্যার ছয় বছর পর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এতে হত্যার ‘প্রমাণ মেলেনি’ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ওই তরুণ ‘আত্মহত্যা’ করেছিলেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা কোর্ট (প্রসিকিউশন) শাখার পরিদর্শক জাকির হোসাইন মাহমুদের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার আবদুস সালাম মিয়া। জাকির হোসাইন মাহমুদ বলেন, বৃহস্পতিবার দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যা মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
এ বিষয়ে দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর বড় বোন জোবাইদা সরোয়ার নিপা বলেন, দিয়াজ হত্যা মামলায় পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে শুনে আমি জিআরওর কাছে গিয়েছিলাম। জিআরও এই বিষয়ে জানেন না বলেছেন। যদি চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়ে থাকে অবশ্যই আদালতে নারাজি দেওয়া হবে।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে মামলা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) তৎকালীন সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, চবি ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি আলমগীর টিপু, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল মনসুর জামশেদ, সিনিয়র সহসভাপতি মনসুর আলম, সহসভাপতি আবদুল মালেক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু তোরাব পরশ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আরমান, প্রচার সম্পাদক সম্পাদক রাশেদুল আলম জিসান ও অপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমানসহ অন্য আসামিদের অব্যাহতি চাওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট এলাকায় ভাড়া বাসার নিজ কক্ষ থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে হাটহাজারী থানা পুলিশ। পরদিন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে প্রথম ময়নাতদন্ত হয়। ২৩ নভেম্বর দেওয়া প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়। দিয়াজের পরিবার ওই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে।
এ ঘটনায় দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ নভেম্বর ১০ জনকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা করেন। পরে তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দিয়াজের লাশ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের আদেশ দেন। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ১০ ডিসেম্বর লাশ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জুলাই দ্বিতীয় দফার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, দিয়াজের শরীরে আঘাতজনিত জখমের মাধ্যমে হত্যার আলামত আছে।
এরপর আদালতের নির্দেশে হাটহাজারী থানায় হত্যা মামলা রেকর্ড হয়। হাটহাজারী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বেলাল উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর নিজেই সেটির তদন্ত শুরু করেন। পরে মামলার তদন্তভার যায় সিআইডির কাছে।