এক সপ্তাহের মধ্যে ভাগ্য বদলে গেল প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষকের। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বাতিল হওয়াদের চাকরি আপাতত বাতিল না করার নির্দেশ দিয়েছেন। বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের গত সপ্তাহে দেয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি বাতিলের নির্দেশে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে। পাশাপাশি ডিভিশন বেঞ্চ বলছে, নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা নিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদকে যে নির্দেশ দিয়েছেন, তা মেনে চলতে হবে। তবে, ওই ৩০ হাজার প্রাথমিকের শিক্ষককে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও অংশ নিতে হবে।
গত সপ্তাহে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় দীর্ঘ শুনানির পর ৩৬ হাজার প্রশিক্ষণহীন প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের রায় দিয়েছিলেন। পরে মামলাকারীদের আইনজীবী আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান, প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীদের আসল সংখ্যা ৩৬ হাজার নয়, ৩০ হাজার ১৮৫। ছাপার (টাইপোগ্রাফিক্যাল এরর) ভুলের কারণে এ বিভ্রান্তি হয়েছে। বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছিলেন, আগামী চার মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। পাশাপাশি, জানিয়ে দিয়েছিলেন চাকরিচ্যুতরা আপাতত ৪ মাস তাঁদের স্কুলে যেতে পারবেন। তবে তাঁদের বেতন দেওয়া হবে পার্শ্বশিক্ষকদের বেতনকাঠামো অনুযায়ী।
তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিলেন চাকরিহারাদের একাংশ। এক সপ্তাহের মাথাতেই সেই মামলায় নতুন রায় দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। শুনানির সময় বিচারপতি তালুকদার বলেন, একক বেঞ্চ তো আবার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়ার সুযোগ দিয়েছে। কাউকে তো নেকড়ের সামনে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হয়নি। তা হলে সমস্যা কোথায়?
প্রসঙ্গত, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের প্রাথমিকের নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ১৪০ জন চাকরিপ্রার্থী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। তাদের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, এই মামলাকারীদের থেকে কম নম্বর পেয়ে প্রশিক্ষণহীন অনেকেই চাকরিতে ঢুকেছেন। তবে প্রশিক্ষিত (ডিএলএড থাকা) ৬ হাজার ৫০০ জনকে নিয়ে কখনোই বিতর্ক ছিল না। শুনানির শেষে বাকি প্রশিক্ষণহীন প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়োগ বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।