বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) এক নারী কর্মকর্তার করা ধর্ষণ মামলায় দুই পক্ষের আপোষের শর্তে জামিন পেয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস (৪০)। গতকাল মঙ্গলবার বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতে হাজির হয়ে তিনি জামিন প্রার্থনা করেন। বিচারক মো. ইয়ারব হোসেন আবেদন মঞ্জুর করেন। ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী হুমায়ন কবীর দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন । তিনি জানান, আপোষ-মীমাংসার শর্তে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে জামিন দেয়া হয়েছে।
মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস বরিশাল আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। বর্তমানে তাকে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে দায়িত্বে রাখা হয়েছে । চলতি বছরের ২ জানুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও ধর্ষণ মামলা করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ওই নারী কর্মকর্তা।
মামলার বরাতে বেঞ্চ সহকারী জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফেরদৌস ও ববি নারী কর্মকর্তার সঙ্গে পরিচয় হয়। কর্মসূত্রে দুজনে বরিশালে এলে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । পুলিশের ওই কর্মকর্তা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই কর্মকর্তার ভাড়া বাসায় গোপনে যাতায়াত শুরু করেন। পরবর্তীতে বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে ওই নারী কর্মকর্তার তৎকালীন স্বামী গত বছরের জানুয়ারিতে তাকে তালাক দেন।
এরপর গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি বরিশাল আর্মড ব্যাটালিয়ন বাংলোতে ইসলামি রীতি অনুযায়ী ওই নারী কর্মকর্তাকে বিয়ে করেন পুলিশ কর্মকর্তা ফেরদৌস। পরে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তাঁরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন। গত বছরের মার্চে ফেরদৌসের প্রথম স্ত্রী সন্তানসহ বাংলোতে আসেন। তখন মামলার বাদিও সেখানে গেলে তাকে মারধর করা হয়। একই বছরের ২২ জুলাই গুলশানের এক বন্ধুর বাসায় দুজনের বিয়ে নিবন্ধন হয়। গত বছরের ৮ অক্টোবর ফেরদৌস বরিশাল থেকে বদলি হয়ে ঢাকায় চলে যান।
এরপর যোগাযোগ করলে তিনি বিয়ের কথা অস্বীকার করেন এবং এ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দেন। এ ঘটনায় একাধিক আইনি নোটিশ দেয়ার পর পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও ধর্ষণ মামলা করেন ববির ওই নারী কর্মকর্তা। এর আগে পুলিশ সদর দপ্তরে অভিযোগ দিলে বিভাগীয় মামলাও হয় পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান ফেরদৌসের বিরুদ্ধে।