খ্যাতনামা লেখক ও শিক্ষাবিদ আবদুল্লাহ আল-মুতী শরফুদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। আবদুল্লাহ আল-মুতী শরফুদ্দিন ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের ১ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জের ফুলবাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে এমএসসি ডিগ্রি লাভের পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা বিষয়ে ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে এমএ এবং ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
তার কর্মজীবন শুরু হয় সরকারি কলেজের শিক্ষক হিসেবে। পরবর্তী সময়ে তিনি শিক্ষক-শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, জনশিক্ষা পরিচালক (ডিপিআই), বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক কাউন্সিলর এবং বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।
চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি এডিবি-ইউএনডিপির অর্থায়নে মাধ্যমিক বিজ্ঞান শিক্ষা প্রকল্পের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন। বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রাণের ক্ষেত্রে আল-মুতী শরফুদ্দিনের অবদান অসামান্য। তিনি এ দেশে বিজ্ঞানকে শিশু-কিশোরদের মধ্যে জনপ্রিয় করার পথিকৃৎ। তার প্রকাশিত বিজ্ঞান, পরিবেশ ও শিক্ষাবিষয়ক বইয়ের সংখ্যা ২৮টি।
বিজ্ঞান শিক্ষা ও সাহিত্য ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার, একুশে পদক, শিশু একাডেমি পুরস্কার, ইউনেসকোর কলিঙ্গ পুরস্কার এবং ড. কুদরত-ই-খুদা স্বর্ণপদকসহ এক ডজনের অধিক পুরস্কার লাভ করেন।
উল্লেখযোগ্য বইগুলোর মধ্যে রয়েছে– বিজ্ঞান ও মানুষ, এ যুগের বিজ্ঞান, বিপন্ন পরিবেশ, বিজ্ঞান-জিজ্ঞাসা, সাগরের রহস্যপুরী, মেঘ, বৃষ্টি, রোদ এবং পরিবেশের সংকট ঘনিয়ে আসছে।
আল-মুতী শরফুদ্দিন বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বিজ্ঞান বিশ্বকোষের প্রধান সম্পাদক ছিলেন এবং ‘মুকুল’ নামে ছোটদের সাময়িকী সম্পাদনা করেছেন।
তিনি সাহিত্য সংসদ, প্রগতি লেখক সংঘ, কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলা, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, বিজ্ঞান সংস্কৃতি পরিষদসহ বিভিন্ন সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
তিনি ইসলামিক একাডেমি অব সায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা ফেলো; বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির ফেলো এবং সভাপতি এবং বাংলা একাডেমির সভাপতি ছিলেন। ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের আজকের এই দিনে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।