বিখ্যাত লোকসংগীত শিল্পী আবদুল আলীম এর জন্মদিন আজ। তিনি ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের তালিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বেশি দূর অগ্রসর হয়নি। পাঠশালায় পড়ার সময় গ্রামোফোন রেকর্ডে গান শুনে সংগীতের প্রতি তিনি আকৃষ্ট হন, পরে স্থানীয় ওস্তাদ সৈয়দ গোলাম আলীর নিকট সংগীতে তালিম নেন। শৈশবেই সভা-সমিতিতে গান গেয়ে আবদুল আলীম সুনাম অর্জন করেন। পরে কলকাতা যেয়ে আব্বাসউদ্দীন আহমদ ও কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে তিনি পরিচিত হন।
দেশভাগের পর আবদুল আলীম ঢাকা এসে বেতার-শিল্পীর মর্যাদা লাভ করেন। এখানে বেদারউদ্দীন আহমদ, ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খসরু, মমতাজ আলী খান, আব্দুল লতিফ, কানাইলাল শীল, আব্দুল হালিম চৌধুরী প্রমুখের নিকট তিনি লোকসংগীত ও উচ্চাঙ্গ সংগীতে শিক্ষা গ্রহণ করেন। ঢাকার সংগীত মহাবিদ্যালয় লোকগীতি বিভাগে তিনি কিছুদিন অধ্যাপনাও করেন। বেতার, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ইত্যাদি মাধ্যমে গান গেয়ে তিনি যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। কলকাতা, বার্মা, চীন ও প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন সফর করে তিনি বিদেশিদের কাছে বাংলা লোকসংগীতের পরিচয় তুলে ধরেন।
আবদুল আলীম মারফতি-মুর্শিদি গানে ছিলেন অদ্বিতীয়। তার দরদভরা কণ্ঠে মরমিধারার এ গান অতি চমৎকারভাবে ফুটে উঠতো। তার গাওয়া ‘হলুদিয়া পাখি সোনারই বরণ, পাখিটি ছাড়িলো কে’ গানটি খুবই জনপ্রিয় হয়েছিলো। তিনি প্রায় পাঁচশ গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। এসবের মধ্যে কিছু গান তার নিজের রচনা। সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক (মরণোত্তর, ১৯৭৭), পূর্বাণী চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার লাভ করেন। আব্দুল আলীম ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দের ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।