ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সংখ্যালঘু’ তকমা ফিরে পাওয়ার রাস্তা তৈরি হয়েছে। যদিও ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে এক ঐতিহাসিক রায়ে শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই ‘সংখ্যালঘু’ তকমা দাবি করতে পারে না।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের সাত সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ ওই রায় খারিজ করে দেন। সাত সদস্যের বেঞ্চ ৪:৩ বিভাজনের রায়ে বলা হয়েছে, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় ‘সংখ্যালঘু’ তকমা দাবি করতেই পারে।
তবে এই রায়ে এখনই সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানের তকমা পাচ্ছে না আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়। এর জন্য তিন বিচারপতির আলাদা একটি বেঞ্চ গঠিত হবে। সেই বেঞ্চই যাবতীয় পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে যে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানের তকমা পাবে কিনা।
১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে সুপ্রিম কোর্টের রায়েই সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা হারিয়েছিল আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৮১ সালে তৎকালীন সরকার আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধন করে সেটিকে সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ফিরিয়ে দিয়েছিল।
তবে ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে এলাহাবাদ হাইকোর্ট ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের সংশোধনীকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়েছিল। সেই সময় উচ্চ আদালতের বক্তব্য ছিল, কেন্দ্রীয় সরকারের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংখ্যালঘু সংস্থার মর্যাদা পেতে পারে না। পরে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সেই মামলায় শুক্রবার নিজের কর্মজীবনের শেষ দিনে ৪:৩ বিভাজনের ভিত্তিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতির মত নিয়ে রায়টি লিখেছেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। ওই রায়ে ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দের সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেয়া হয়। ফলে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তকমা দাবি করায় আর বাধা থাকল না। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন পৃথক তিন বিচারপতির নতুন বেঞ্চ। শিগগিরই সেই বেঞ্চ গঠন করা হবে।
ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের আলিগড় শহরে অবস্থিত। ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে মুহাম্মদান অ্যাংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে সেটিকে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে