করোনার প্রাদুর্ভাবে পঞ্চম শ্রেণির ৪৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থীই ইংরেজিতে পিছিয়ে পড়েছে। এ ছাড়া বাংলায় ৩৩ দশমিক ৩৫, গণিতে ৪২ দশমিক ৯২, বিজ্ঞানে ৩ দশমিক ৯২ এবং বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে ৩৯ দশমিক ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী পিছিয়ে রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে আছে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। আর সিলেট বিভাগের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে।
করোনায় প্রাথমিকের শিখন ঘাটতি ও এর প্রতিকারসংক্রান্ত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এই গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালনা করেছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথম শ্রেণির বাংলায় ৩৫ দশমিক ৫৯, ইংরেজিতে ৩১ দশমিক ০৯ ও গণিতে ৭৮ দশমিক ২৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পিছিয়ে পড়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণিতে বাংলায় ৪২ দশমিক ৭২, গণিতে ৪১ দশমিক ৬১ ও ইংরেজিতে ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ পিছিয়ে আছে। তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় ৩৮ দশমিক ৯৪, ইংরেজিতে ৩৫ দশমিক ২৮, গণিতে ৩৯ দশমিক ৭১, বিজ্ঞানে ৪৮ দশমিক ৮৪ এবং বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে ৩৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ পিছিয়ে আছে। আর চতুর্থ শ্রেণিতে বাংলায় ৪৩ দশমিক ৭৩, ইংরেজিতে ৪৮ দশমিক ৫৬, গণিতে ৩৮ দশমিক ৭৮, বিজ্ঞানে ৩৬ দশমিক ৩৪ এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে ৪৩ দশমিক ১৪ শতাংশ পিছিয়ে আছে।
বিভাগগুলোর মধ্যে সিলেট বিভাগের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে রয়েছে। বরিশাল বিভাগের শিক্ষার্থীরা সব শ্রেণি ও বিষয়ে অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের চেয়ে এগিয়ে। দ্বিতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা শহরের শিক্ষার্থীদের চেয়ে তুলনামূলক ভালো করেছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে শহরের শিক্ষার্থীরা অল্প ব্যবধানে গ্রামের শিক্ষার্থীদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। সব বিষয় ও শ্রেণিতে সমতল অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা পাহাড়ি অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের চেয়ে ভালো ফলাফল করেছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, করোনাকালীন দূর শিখন, অনলাইন ক্লাস, ডিভাইসসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ক্লাস পরিচালিত হলেও চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শতকরা প্রায় ৭০ দশমিক ২ শতাংশ শিক্ষার্থী টেলিভিশনের সম্প্রচারিত দূর শিখন কার্যক্রমে অংশ নেয়নি। ৭৬ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী মোবাইল এবং ৮৪ দশমিক ২ শতাংশ শিক্ষার্থী কখনোই রেডিওর মাধ্যমে দূর শিখন কার্যক্রমে অংশ নেয়নি।
গবেষণায় চার দফা সুপারিশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ২০২০ ও ২০২১ সালে যেসব শিক্ষার্থী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল, তাদের জন্য একটি ‘প্রতিকারমূলক শিখন প্যাকেজ’ করতে হবে। আর করোনাকালীন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এরই মধ্যে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে। তাদের শিখন-ক্ষতি ও শিখন-ঘাটতি জানতে আরেকটি গবেষণা পরিচালনা করা যেতে পারে।